মানুষ মন-মানসিকতা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। কেউ কঠোর স্বভাবের অধিকারী হয় আবার কেউবা শান্তশিষ্ট। কারো মাঝে থাকে উভয়টির মিশ্রণ।
সাধারণত নিরীহ ভাবমূর্তির মানুষ অন্যায় অবিচারের মুখোমুখি হয়। তাঁর নিরীহ স্বভাবকে দুষ্ট-শ্রেণী কাজে লাগায়। তবে নিরীহ হবার কারণে সহ্য করার মানসিকতা তাঁর মাঝে অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে।
কঠোর স্বভাবের মানুষকে নিয়ে সাধারণ শ্রেণী শঙ্কিত থাকে। যেকোনো বিষয়ে নিজের পছন্দকে অগ্রাধিকার দিতে পছন্দ করে। অন্যায় অবিচার এই শ্রেণী থেকেই অধিকাংশ সময় হয়ে থাকে।
যেসব মানুষ সবসময় শান্ত থাকতে পারে এবং প্রয়োজনের সময় কঠোর হতে পারে, এরা উভয় শ্রেণী থেকে উত্তম।
আরবি একটি প্রবাদ আছে, যার অনুবাদ হচ্ছে “তুমি এতো নরম হয়ো না যাতে নিংড়ানো হয় আর এতো শক্ত হয়ো না যাতে ভেঙ্গে ফেলা হয়।” ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারা অনেক বড় সফলতা। অনেকেই ভাবে, বর্তমান সমাজে নিরীহ মানুষ যেহেতু সবসময় অন্যায় অবিচারের স্বীকার হয়, তবে আমাদের নিরীহ হয়ে লাভ নেই। ফলে কঠোর মনোভাব লালন করতে চেষ্টা করে। আর এই মনোভাবের প্রকাশ এমন-স্থানে হয় যে, সে নিজের অজান্তে জালিম হয়ে যায়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ, সামাজিকভাবে অশিক্ষিত মানুষেরা সাধারণত কঠোর মনোভাব ধারণ করেন। প্রয়োজনের সময় অবশ্যই কঠোর মনোভাব ধারণ করা দরকার। কিন্তু সবসময় গম্ভীর ভাবমূর্তি গ্রহণ প্রশংসনীয় কিছু নয়। অথচ মানুষের সাথে ভালো ব্যবহারের মানসিকতা নেই, সবসময় ভাব নিয়ে থাকেন, হাসিমুখে কথা বলতে জানেন না, এমন মানুষকে আমাদের সমাজে উন্নত মানসিকতা ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী মনে করা হয়।
হাদিসে আসছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন; একব্যক্তি রাসূল সা. কে নিজের কঠোর স্বভাব সম্পর্কে অভিযোগ করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন; ইয়াতিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দাও আর মিসকিনকে আহার করাও। (এতে করে তোমার কঠোর মনোভাব দূর হয়ে যাবে)
হযরত আবু দারদা রা. বর্ণনা করেন; একব্যক্তি রাসূল সা. –এর দরবারে উপস্থিত হয়ে নিজের কঠোর মনোভাবের কথা ব্যক্ত করলেন। তখন রাসূল সা. বললেন; তুমি কি চাও যে, তোমার মন-মানসিকতা নরম হয়ে যাক এবং তোমার প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যাক? যদি চাও তবে, ইয়াতিমের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করো, তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দাও, তাঁকে তোমার খাবারে অংশীদার বানাও। এতে করে তোমার মন-মানসিকতা নরম হয়ে উঠবে আর তোমার প্রয়োজনও পূর্ণ হয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ভালো মানুষ বানিয়ে দিন। ফেসবুকে প্রকাশিত