বন্ধুত্বের অপর নামই কি ভালোবাসা। হয়তো বা! যদি নাই হবে তবে বন্ধু বিরহে মন কেন কেদে ওঠবে? কেন মিনিট দুয়েক কথা বলার জন্য মন আঁকুপাঁকু করবে? ঈদের বাজার করতে গিয়ে পুরনো স্মৃতি কেন মাথা চড়া দিয়ে ওঠবে?
সময় আর প্রয়োজন বন্ধুত্বকে শীতল করে দেয়। তবে মনের একপাশটা বন্ধু বিরহে ঠিকই চিন চিন করে ওঠে।
সরল বন্ধুত্বের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হলো হারিয়ে ফেলার ভয়। মানব জীবনে কতো বন্ধুই আসে। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায় হাতে গুনা কজন মাত্র ঘিরে আছে স্বপ্নের এই জগত।
অনেকেই বলে তুমি আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি প্রিয় থাকে? নাকি আপন করে ধরে রাখা যায়? তবে মধুর স্মৃতিগুলো শেষ পর্যন্ত থেকে যায় এবং ভবিষ্যতের পথে হয়ে উঠে সঞ্চয়।
একটা সময় জীবনের রঙ যখন বদলে যায়। চোখের সামনে সবকিছু যখন ঝাপসা ভেসে আসে। সেই সরল স্মৃতিগুলোই তখন ফিরিয়ে নিয়ে আসে সাদাকালো জীবনে রঙের আবেশ।
বন্ধুত্ব হচ্ছে নিষ্প্রাণ ফুলের ন্যায় নির্মল। ফুলের রাজ্যে ঘ্রান নিতে ছুটে চলা পাখিরা যেভাবে মায়াময় ফুলের সুঘ্রানে মত্ত হয়। নিষ্পাপ বন্ধুত্বও তেমনি মানব মনে অজানা এক শিহরণের জন্ম দেয়।
রাত ৩-টা। ভয়ানক এক দুঃস্বপ্ন দেখে সজীবের ঘুম ভেঙ্গে যায়। ভয়ে শরীর থরথর করে কাঁপছে। মোবাইল হাতে নিয়ে স্ক্রিনের আলোর দিকে থাকিয়ে সে ভাবতে থাকে কি স্বপ্ন দেখলাম! কল্পনায় স্বপ্নকে পিছনে ফেলতে চেষ্টা করে। কিন্তু মনের ভেতরটা তখন ভয় পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে। সে মুজীবের নাম্বারে ডায়াল করে। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে ওপাশ থেকে মুজীব হ্যালো বলতেই সজীবের মনের ভেতর সঞ্জীবিত হয়ে ওঠে। শরীরের কম্পন বহাল থাকলেও মনের ভেতর তখন সাহস জন্ম নিতে শুরু করেছে।
অন্ধকার গৃহে একাকী অবস্থায়ও সজীব অনুভব করে সে আসলে একা নয়। তার সাথে ফোনের ওপাশে আছে মুজিবের সেই চিকন গলার মিষ্টি আওয়াজ।
ফোনের ওপাশে মুজীবের ঘুম জড়ানো আওয়াজ সব ভয় যেন শত মাইল দূরে নিয়ে গেছে। এটাই নিষ্পাপ বন্ধুত্ব।