দাড়ি,টুপি,বোরকা বাঙালির পরিচয় বহন করে না এমন অদ্ভুত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় মিতা হক। অথচ বৈশ্বিক চিত্র দেখলে স্পষ্ট হয়, ভাষা নয় ভূখণ্ডের মাধ্যমে জাতির পরিচয় নির্ধারিত হয়। যেমন ইংরেজি ভাষায় কথা বলা সত্ত্বেও ব্রিটেনের নাগরিকরা ব্রিটিশ, আমেরিকার নাগরিকরা আমেরিকান, হিন্দি ভাষায় কথা বলে ইন্ডিয়ার মানুষেরা ইন্ডিয়ান, জাতীয় ভাষা উর্দু হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের মানুষের পরিচয় পাকিস্তানী। আমরা কোন দুঃখে তবে বাঙালী হতে যাবো? যদিও আমরা বাঙালী নাকি বাংলাদেশী বিতর্ক এখনো চলমান, তবে অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশী পরিচয়টাই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়। বিতর্কিত দ্বৈত পরিচয় দিয়ে নিজেকে জাতে তোলার চেষ্টা দেশপ্রেমিকদের করতে হয় না।
মিতা হকের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে তার অজ্ঞতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। নিজেকে একমাত্র বাঙালী দাবী করা মিতা হক নিজেই বাঙালী রীতিতে শাড়ি পরেননি। ব্লাউজ ছাড়া আদি বাঙালী রীতিতে শাড়ি পরে চাপাবাজি করলে তার দাবী কিছুটা যুতসই হতো।
তার জানা উচিত ছিলো দাদাবাবুদের সাথে বাংলাদেশীদের সীমারেখা ৪৭ এ নির্ধারিত হয়ে গেছে। হিন্দির প্রভাবে অস্থির বাবুদের জন্য বাঙালী পরিচয় এখন অধিক মানানসই। মিতা হকদের বাংলাদেশী পরিচয় দিতে ভালো না লাগলে বর্ডার খোলা আছে; চলে যেতে পারেন। বাংলাদেশীদের জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো যোগ্যতা, ক্ষমতা, অধিকার মিতা হকদের কোনোকালে ছিলো না। নগ্নতার ক্যানভাসারদের জন্য এদেশ স্বাধীন হয়নি।
ভাবনা শক্তি থমকে যায়, যখন দেখি রক্তের বদলে প্রাপ্ত স্বাধীনতা মিতা হকদের কাছে এতোটাই মূল্যহীন যে, নিজেদের বাংলাদেশী পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেন! সংখ্যাগুরু মানুষের ধর্মীয়, সামাজিক রীতিনীতিকে কটাক্ষ করেন! স্যালুট রবীন্দ্রনাথ; “রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি!” এর মতো অমর-বানী আপনি যে ভুলক্রমে লেখেননি আপনার ভাবশিষ্য প্রমাণ করে দিলো।
প্রথম প্রকাশ