মদীনার শাব্দিক অর্থ শহর। আমাদের কাছে মদীনা মানে ঐ পবিত্র শহর, যেখানে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) মক্কার কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে হিজরত করেছিলেন। আল মক্কাতুল মুকাররামাহ এবং মদীনাতুল মুনাওয়ারা উভয়টি পৃথিবীর সবচাইতে সম্মানিত শহর। তবে উভয়ের মধ্য থেকে হুজুর (সাঃ) -এর পবিত্র রওজা মোবারক হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম স্থান। যা মদীনায় অবস্থিত।
পবিত্র রওজা মোবারকের পর মক্কা এবং মদীনার মধ্যে শ্রেষ্ট শহর কোনটি, এ ব্যাপারে উলামাদের মাঝে মতবিরোধ আছে। ইমাম মালীক(রহঃ) -এর মতে মদীনা মক্কার চাইতে উত্তম। কারণ, হুজুর (সাঃ) মদীনায় হিজরত করেছিলেন, সাহাবায়ে কেরাম মদীনায় অবস্থান করেছিলেন, হুজুর (সাঃ) মদীনার জন্য সীমাহীন দোয়া করেছিলেন। অপরদিকে ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ), ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এবং ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল(রহঃ) -এর মতে আল মক্কাতুল মুকাররামাহ মদীনাতুল মুনাওয়ারার চাইতে শ্রেষ্ট। কেননা হুজুর (সাঃ) মক্কা থেকে হিজরত করার সময় মক্কার দিকে ফিরে বলেছিলেন : হে আমার প্রিয় জন্মভূমি মক্কা! সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম অংশ হচ্ছে তোমার। আল্লাহর ভূমির মধ্য থেকে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছো তুমি। যদি আমাকে তোমার বুক থেকে বের করে দেয়া না হতো, আমি বেরোতাম না।
ইসলামের পূর্বে মদীনার নাম ছিল ইয়াছরিব। হিজরতের পর হুজুর (সাঃ) প্রথম নাম রেখেছিলেন তায়্যিবা। ঐতিহাসিকদের কাছ থেকে মদীনার প্রায় ৯৫টি নাম বর্ণিত আছে। মদীনার সীমানা হুজুর (সাঃ) নিজেই বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন : হজরত ইব্রাহীম (আঃ) মক্কাকে সংরক্ষিত ঘোষনা করেছিলেন, আমি মদীনাকে সংরক্ষিত ঘোষনা করলাম। যা দুই কাল পাথুরে এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। অপর বর্ণনায় আছে আমি দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী অংশকে সংরক্ষিত ঘোষনা করলাম। উভয় বর্ণনার মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই। কেননা পূর্ব ও পশ্চিমে পাথুরে ভূমি এবং উত্তর ও দক্ষিনে পাহাড় মদীনাকে ঘিরে রেখেছে। উভয় পাহাড়ের একটিকে “আঈর” এবং অন্যটিকে “ছূর” বলা হয়।