অনেকদিন থেকে পরিকল্পনা করা হয় কক্সবাজার যাব। যদিও সাতার জানি না! তারপরও ঘুমের মধ্যে কয়েকবার সমুদ্রে সাতার কাটা শেষ,কিন্তু কক্সবাজার-তো যাওয়া হয় না। কুমিল্লা/চাঁদপুর/থেকে শুরু করে রাজশাহী পর্যন্ত ভ্রমণ করলাম,সাধের কক্সবাজার দেখলাম না! এনিয়ে মনের মধ্যেও কষ্ট অনুভব করতে শুরু করেছি মাত্র,এমনি মুহূর্তে কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ সামনে আসল।
নির্ধারিত ১৩-ডিসেম্বর রাতে সিলেট থেকে কক্সবাজার যাত্রা করলাম। পরদিন ১৪-ডিসেম্বর পৌছুতে প্রায় ১২-টা বেজে গেল।
(আমার এই কাহানী মূলত সেন্ট মার্টিন নিয়ে,তাই কক্সবাজার প্রসঙ্গ এখানেই শেষ করা ভাল মনে করছি।)
১৫-ডিসেম্বর ভোর ৬-টায় কক্সবাজার থেকে বাসে টেকনাফ যাত্রা করলাম। সেখান থেকে কেয়ারী সিন্দাবাদ নামক লঞ্চ সাইজের জাহাজে করে সেন্ট মার্টিনের পথে যাত্রা করলাম। মস্তিষ্ক নামক বস্তুটি খুব বেশী ভুল না করে থাকলে প্রায় ১২-টার দিকে সেন্ট মার্টিন পৌঁছে গেলাম। আগে থেকেই বিখ্যাত জলপরী রিসোর্ট আমাদের নামে বরাদ্দ ছিল। শীপ থেকে নেমে সেখানকার একমাত্র বাহন ভ্যানে করে রিসোর্টের পথে যাত্রা করলাম। একটা কথা জানিয়ে রাখা ভাল মনে করছি,প্রথমবার রিসোর্টে নিয়ে যেতে আমাদের কাছ থেকে ভ্যান-চালক ১০০-টাকা নিলেও পরবর্তীতে সমান জায়গা ১৫-টাকায় নিয়ে যেতে রাজি ছিল।
ভ্যান আমাদের নিয়ে বেশ ছোট কিন্তু পাকা সড়ক দিয়ে যাত্রা করল। একটু পরেই চালকের মুখে শুনতে পেলাম,এই!বাজিব,বাজিব। একটু খেয়াল করে দেখলাম সামনে মানুষ দেখলেই ভ্যানওয়ালা বলছেঃ এই!বাজিব,বাজিব। ভ্যান রাস্তার বাম পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিল,আমি মনে করলাম ভ্যানওয়ালা বলছেঃ বামে যাব,বামে যাব। আমার বড় ভাইয়া বললেনঃ লাগবে,লাগবে।
কথা বলতে বলতে রিসোর্টে পৌঁছে গেলাম। বাজিব কাহানী আপাতত শেষ হল। সব ভুলে গোসল করতে মনযোগী হলাম। আমাদের রিসোর্ট থেকে সমুদ্র হেটে ১-মিনিট দূরত্বের পথ। হেটেই চলে গেলাম।ভ্যানে চড়ার পয়োজন হল না। বিকেলের দিকে যখন বাইরে বেরোলাম,আপু বললেনঃ বড় বাজার দেখতে চান। আবারও ভ্যানে যাত্রা এবং সেই বাজিব শুনতে শুনতেই বাজারে পৌছুলাম।
এবার ভাইয়ার সাথে আমার বাজি।আমি বলি বাজিব মানে বায়ে যাব।তিনি বলেনঃ বাজিব মানে লাগিব।
ভাগ্য ভাল আমাদের ভ্যান চালক ইসমাইল মিয়ার সাথে ভালই পরিচয় হল। আসার আগে সে তার বাড়িতে পর্যন্ত আমাদের নিয়ে গেছিল।
ইসমাইল মিয়ার কাছ থেকে দারুচিনি দ্বীপ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। সেই সাথে আমাদের দুজনের বাজিব নিয়ে বাজির কথা বলে জানতে চাইলাম কার কথা সঠিক।
ফলাফল আর নাই বললাম। হয়তো আপনারা বুঝেই গেছেন আমি পরাজিত। তবে বড় ভাইয়ের কাছে পরাজয়ে কোন লজ্জা নেয়,এমন সান্ত্বনামূলক চিন্তা করে মনকে প্রবোধ দিলাম,আর ভাবলাম হোক না আমার পরাজয়! নতুন একটি বিষয়-তো জানলাম।