অদ্ভুত এক টানাপোড়নে ভুগছি। মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ’র “ঈমান সবার আগে” গ্রন্থটি সম্প্রতি আবার পড়ে শেষ করলাম। এখন নিজের অবস্থা ভেবে ভীত শঙ্কিত।
অনেকেই ভাবছে বিশ্ব পরিস্থিতি আচমকা বদলে গেছে। আমার কাছে বিষয়টি এমন মনে হচ্ছে না। রাশিয়া হয়তো নতুন ভূমিকায় মাঠে নেমেছে, কিন্তু ফলাফল তো আগের মতোই! আগেও মুসলমানদের উপর হামলা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। একদিকে সিরিয়ায় মুসলমানরা শহীদ হচ্ছে, অন্যদিকে ইসরাইলী পশুরা ক্ষুধার্ত হায়েনার ভূমিকা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের মারছে। জানি না কি আছে আমাদের ভাগ্যে!
সম্প্রতি একটি প্রশ্ন বারবার মনে আসছে। মুসলমান পরিচয় কি দেশের সীমানার ভেতরে সীমাবদ্ধ! মধ্যপ্রাচ্যে যখন অস্থির পরিস্থিতি, মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে, ইউরোপে আশ্রয় নিচ্ছে, বোমার আঘাতে জীবন দান করছে, দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা ঠিকই সময় মতো খাওয়া দাওয়া করে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছি। পিকনিকে যাচ্ছি! কবিতা আবৃত্তি করে আনন্দ পাচ্ছি। আমাদের জীবনে কি নেই! সবই তো আছে!
আর কিছু নাহ হোক, দোয়া করার সময় মজলুম মুসলমানদের কথা একটিবারও কি স্মরণ করছি! চোখ থেকে একটু অশ্রু কি ঝরিয়েছি! আমাদের তো সবই আছে। এসবের কি দরকার!
অতি আশাবাদী মানুষকে আমার বরাবরই অপছন্দ। আশা ভরসারও একটি সীমা থাকা চাই। দাজ্জাল বেরিয়ে আসছে, ইমাম মাহদীর আগমনের সময় হয়ে এসেছে, এই অঞ্চলের উলামায়ে কেরাম ভীতু কাপুরুষ, এরা ইমাম মাহদীর দলের সদস্য হবেন না, এই সেই কথাবার্তা যারা বলে তাদের কানের নীচে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করে। আপনি কবে থেকে সাহেবে কাশফ হয়ে গেলেন যে, ভবিষ্যৎবাণী করতে শুরু করেছেন। নিজের নামাজের ঠিকানা নেই মোড়লের ভূমিকায় নেমে পড়েছেন।
উপরে যা কিছু বললাম, সব এলোমেলো ভাবনার বহিঃপ্রকাশ। এই এলোমেলো ভাবনার কারণে কয়েকদিন ধরে মাথা ভারী হয়ে আছে। যাদের কাছে “ঈমান সবার আগে” গ্রন্থটি আছে, সম্ভব হলে আরেকবার পড়ুন এবং আপনার ঈমানকে পরীক্ষা করুন। এই যুগে ঈমান সংরক্ষণের চাইতে কঠিন কাজ আপাতত আমার কাছে অন্য কিছু মনে হচ্ছে না। মাফ চাই। ফেসবুকে প্রকাশিত