গালিগালাজকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন, “মুসলমানদেরকে গালমন্দ করা ফাসেকী আর তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা কুফরী।” (বুখারী ও মুসলিম)
অথচ মনের সামান্য বিপরীত কিছু দেখলেই আমরা গালির ফোয়ারা প্রবাহিত করি। অজ্ঞতায় ভর্তি নিজের মতামতকে গুরুত্বপূর্ণ করতে, নিজের ভ্রান্ত বিশ্বাসকে প্রমাণিত করতে আমাদের যুদ্ধসুলভ মনোভাব সত্যিই দুঃখজনক।
রাসূল (সা:) বলেছেন : কিয়ামত দিবসে গালিদাতা মন্দ-লোকদের জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। অপর এক হাদিসে হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত; রাসূল (সা:) একদা সাহাবায়ে কেরামকে জিজ্ঞেস করলেন; তোমরা কি জানো কোন মানুষ নিঃস্ব? সাহাবায়ে কেরাম (রা:) বললেন; আমাদের কাছে তো ঐ ব্যক্তি নিঃস্ব, যার কাছে টাকা-পয়সা এবং অন্যান্য বস্তু নেই।
রাসূল (সা:) বললেন; আমার উম্মতের মাঝে ঐ মানুষ নিঃস্ব, যে কিয়ামত দিবসে নামাজ,রোজা,যাকাতসহ আসবে, কিন্তু তার অবস্থা এমন হবে যে, সে পৃথিবীতে কাউকে গালি দিয়েছিলো; কারো উপর অপবাদ আরোপ করেছিলো; কারো সম্পদ হরণ করেছিলো; কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিলো; কাউকে প্রহার করেছিলো। ফলে তার সমস্ত পুণ্য ঐ মানুষদের দিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর যদি মানুষের প্রাপ্য ফিরিয়ে দেয়ার পূর্বে তার পুণ্য ভাণ্ডার শেষ হয়ে যায়, তবে প্রাপ্যের বদলে ঐ মানুষদের পাপ তাকে দিয়ে দোজখে নিক্ষেপ করা হবে। (সহীহ মুসলিম)
জাহান্নামে গমনকারী দুর্ভাগা ব্যক্তি যেসব কারণে জাহান্নামে যাবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি মন্দকর্ম হচ্ছে মানুষকে অন্যায়ভাবে গালি দেয়া।
আজ আমরা মনের বিপরীত কিছু প্রাপ্তি কিংবা সাধারণ বিতর্কে ইচ্ছেমতো গালি প্রদান করি। কোনো দুর্বল মানুষ যদি পৃথিবীতে আমাদের কাছ থেকে গালিগালাজের বদলা নিতে না পারে, তবে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা আমাদের পুণ্য ঐ ব্যক্তির নামে বরাদ্দ করে বদলা প্রদান করবেন।
আসুন! আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি যে, তিনি যেন আমাদের এই পাপকর্ম হতে বেঁচে থাকার তৌফিক প্রদান করেন। ফেসবুকে প্রকাশিত