(১)
সে অনেকদিন আগের কথা। তখন মুতাওয়াসসিতা ২য় তথা সারফে পড়ি। কম্পিউটার কেনার তখনো ১ বছর পূর্ন হয়নি। প্রবাসী কাজিন একদা আমার সংগ্রহে থাকা কিছু ফটো নেয়ার উদ্দেশ্যে তার পেনড্রাইভ দিলো।
আমি তখন কম্পিউটারে তেমন কোনো কাজ করতাম না। মুলত জানতাম-ই না। সময় কাটানোর মাধ্যম ছিলো মোবাইল। মোবাইল দিয়ে কেবল তখন ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। কাজের সীমানাও ছোট ছিলো। ফলে একটা Wap সাইট থেকে ফুল,মসজিদ-ওসামা,সাদ্দামসহ নানারকম মোবাইল উপযোগী ফটো ডাউনলোড করে আলাদা ফোল্ডার বানিয়ে রাখতাম। একেকটা ছবি বড়জোর ১৫/২০ কিলোবাইটের হতো। তখনকার প্রেক্ষাপটে কাজটা মজারই ছিলো।
তো আমি ভাবলাম, কাজিনের পেনড্রাইভে যেহেতু জায়গা আছে, আমার ডাউনলোড করা ফটো দিয়ে দেই। মেমোরি কার্ড থেকে কপি করে বিভিন্নরকম ফটো পেনড্রাইভে দিয়ে দিলাম। আফসোস একবার দেখিওনি যে, ছবিগুলো কম্পিউটারে কেমন দেখাচ্ছে!
কয়েকমাস পর সেই কাজিন একদিন জানতে চাইলো, আমি এসব ছবি দিলাম কেন! বললাম, এসব আমার কয়েক মাসের সংগ্রহ। ভাবলাম, তোমার ভালে লাগবে। তাই দিলাম।
সে তো আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ। বললো,এতো কষ্ট করে এতো অল্প রেজুল্যাশনের ছবি ডাউনলোডের কি দরকার ছিলো। নানারকম ছবির একটা সিডি বা ডিভিডি কিনে নিলেই পারতে অথবা ভালো রেজুল্যাশনের ছবি ডাউনলোড করলেও না হয় কখনো কাজে লাগতো।
তখন বুঝতে পেরেছিলাম, ভাবনা কখনো কখনো ভয়ানক লজ্জাজনক হয়ে উঠতে পারে।
(২)
সপ্তাহ খানেক পূর্বে আবু সাইদ উমর বাসায় আসার পথে আমার জন্য কিছু ইবুক নিয়ে আসলেন। পেনড্রাইভ আমার কাছে দিয়ে বিনয়ী ভঙিতে বললেন, যা ইচ্ছে হয় আমি যেন কপি করে নেই। অতঃপর আমিও আমার সংগ্রহ থেকে তাকে যেন কিছু দেই।
আমি ৮ জিবি পেনড্রাইভ পুরোটা কপি করলাম। অতঃপর আমার ইবুক সমগ্র থেকে তাকে প্রায় ২০০ বই দিলাম। সেই সাথে বলেও দিলাম, প্রায় ২০০ ইবুক দিয়েছি। কিন্তু তার কাছ থেকে কতোটা রেখেছি সেই খেয়াল নেই। তিনি আরো বিনয়ী ভঙ্গিতে বললেনঃ আমি তো মাত্র ৫/৬ টা দিয়েছি। তিনি চলে যাওয়ার পর তার দেয়া ইবুক দেখতে বসে প্রচন্ড লজ্জা অনুভূত হলো। আমার দেয়া ইবুকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বলতে শায়খ হাকীম আখতার রহঃ এর কিছু বই। আর তার দেয়া ইবুকের মধ্যে কি নেই!
তাফসীরে মাআরিফুল কোরআন, তাওযীহুল কোরআন …………। হাদীসের অনেকগুলো গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ। তাবলীগের মুন্তাখাব হাদীস, হায়াতুস সাহাবাহসহ আরো কয়েকটি। ইমাম মুহাম্মাদের কিতাবুল আসার, যে গ্রন্থটি দেখার জন্য বেশ আগ্রহী ছিলাম, সেই বুলুগুল মারাম, আলী নদভীর একাধিক আরবী উর্দু গ্রন্থসহ আরো কতো কিছু………. আসলে চাইলেও সবগুলোর নাম এখন বলা সম্ভব নয়। শুধু অন্তরের শেষপ্রান্ত হতে কৃতজ্ঞতা………. ফেসবুকে প্রকাশিত