অদৃশ্যের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। ইমানদার হওয়ার জন্য এটাই শর্ত। কোনোরূপ যুক্তি তর্কের পিছনে না দৌড়ে আল্লাহ্ তায়ালাকে স্রষ্টা এবং মুহাম্মাদ (সা:) কে তাঁর রাসূল হিসেবে বিশ্বাস করার নামই ঈমান।
ঈমানের নানা শাখা-প্রশাখার মধ্যে একটি হচ্ছে; তাক্বদীর আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের নিয়ন্ত্রণাধীন। কেউ যদি এই কথাটা অবিশ্বাস করে, তবে সে মুমিন হতে পারবে না।
বিভিন্ন মুহূর্তে ধর্ম-বিদ্বেষী যুক্তিবাদী এবং ক্ষেত্রবিশেষ সরলমনা মুসলমানদের মনেও এই প্রশ্ন উদিত হয় যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন যেহেতু সবকিছু নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং মানুষ ভালোমন্দ যাই করুক, সবকিছু আল্লাহ্ তায়ালা কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত। সুতরাং অন্যায় আচরণের জন্য কেন মানুষ পরকালে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে? তবে কি মানুষ স্বীয় কর্মের স্রষ্টা?
>উস্তাযে মুহতারাম গত সপ্তাহে আক্বিদাতুত তাহাভী পড়াতে গিয়ে বর্ণনা করেন> এই প্রশ্নের উত্তরে হাকীমুল উম্মত থানভী (রহঃ) একটি অদ্ভুত দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন যা সব সন্দেহকে দূরীভূত করে দেয়।
“একটি বিশাল পাথর। যায়েদ সেই পাথর অনায়াসে তুলতে পারে। কিন্তু যায়েদের গোলাম আমর সেটি সামান্যতম নড়াতে পারে না।
যায়েদ তার গোলাম আমরকে বললো, এই পাথরটি উত্তোলন করা আমার দৃষ্টিতে অন্যায়। আর বাস্তবতা হচ্ছে, উত্তোলন দূরে থাক কেউ এটি নড়াতেও সক্ষম নয়। আমি পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে এই পন্থা অবলম্বন করেছি যে, কেউ যদি এটি নড়াতে চেষ্টা করে তবে আমি সেটি উত্তোলন করে দেই। আর এই উত্তোলন করার দায় সেই ব্যক্তির দিকে সম্বন্ধিত হয়, যে উত্তোলনের চেষ্টা করেছে।
আর দায়ভারও তার উপর বর্তায়। কেননা আমার নীতি হচ্ছে, কেউ উত্তোলনের চেষ্টা করলে আমি সেটা উত্তোলন করে দেই। সে চেষ্টা না করলে আমি উত্তোলন করতাম না। তুমি যদি চেষ্টা করো তবে আমি পাথরটি উত্তোলন করে দেবো; কিন্তু এই চেষ্টার বদলে তুমি শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।
যায়েদের কথা ভালোমতো শ্রবণের পর আমর সেই পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করতেই যায়েদ স্বীয় নীতি অনুযায়ী সেটি উত্তোলন করে দিলো।” সবকিছু জানার পর আমরের পাথর তোলার চেষ্টা করার ফলে যায়েদের পাথর তোলে দেয়ার জন্য নিঃসন্দেহে সবাই আমরকে দায়ী করবে। যায়েদকে সামান্যতমও দায়ী করবে না। কেননা সে চেষ্টা না করলে যায়েদ সেটি উত্তোলন করতো না।”
যায়েদ যেভাবে স্বীয় গোলাম আমরকে পাথর উত্তোলন করতে নিষেধ করেছিলো, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনও এই উপমার ন্যায় স্বীয় বান্দাদেরকে মন্দ কর্ম করতে নিষেধ করেছেন। এমনিভাবে আমর চেষ্টা করতেই যায়েদ যেভাবে তোলে দিয়েছিলো, কোনো বান্দা মন্দ কর্ম করতে চাইলে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে সেই সুযোগ প্রদান করেন। আর পূর্বে সতর্কবার্তা প্রদানের কারণেই বান্দা আসামি সাব্যস্ত হয়।
বিঃ দ্রঃ> সন্দেহ নেই লেখাটা আরো ব্যাখ্যার দাবী রাখে। কোনোকিছু অস্পষ্ট কিংবা অশুদ্ধ মনে হলে আমায় জানাবেন। অনলাইনে আসার সুযোগ খুব কমই হচ্ছে। আল্লাহ্ তায়ালা তৌফিক দিলে আরো ভালোমতো জেনে অন্যান্য দিক সম্পর্কে লেখার ইচ্ছা রাখি। ফেসবুকে প্রকাশিত