৪:০০ টার সময় ছুটি হতেই তোফায়েলকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম : কোথায়? যখন বললো : জিন্দাবাজার। বললাম, কষ্ট করে (পার্শ্ববর্তী এলাকা) জল্লারপার চলে এসো। আমি বন্দর আসছি। কিছু কাজ আছে। তড়িঘড়ি করে বাইরে এসে একটা রিকশা নিয়ে আমি, মুহিউদ্দিন আবির ও ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বন্দর বাজারের পথে যাত্রা করলাম। জল্লারপার যাওয়ার পর তোফায়েলকে দেখতে পেয়ে আমি রিকশা থেকে নেমে আবির ও মাসউদকে বিদায় দিয়ে আরেকটি রিকশা নিয়ে বন্দর গেলাম। পথিমধ্যে জানতে পারলাম, যে উদ্দেশ্যে বন্দর যাওয়া, ইতিমধ্যে তোফায়েল সেই কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন। বেশ স্বস্তি লাগলো। যাক, বন্দর বাজারস্থ কোর্ট পয়েন্টে পৌঁছতেই শুনতে পেলাম, মহাজোট এই করেছে/ সেই করেছে ইত্যাদি। কথাবার্তা শুনে ধারণা করলাম বিএনপি কিংবা সরকারবিরোধী কেউ হয়তো সমাবেশ করছে।
আমরা রিকশা থেকে নেমে সিটি কর্পোরেশনের পার্শ্ববর্তী কুদরত উল্লাহ মার্কেটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু বই কিনে আসরের নামাজ পড়লাম। যেহেতু আর কোনো কাজ নেই, তাই নামাজ শেষ করে বাসায় আসার জন্য বের হতেই মানুষের দিগ্বিদিক দৌড়াদৌড়ি দেখে আবার মসজিদে চলে এলাম। কয়েক মিনিট পর পরিস্থিতি একটু শান্ত মনে হওয়াতে বেরিয়ে দেখলাম, ৪০/৫০ গজ দূরে একদিকে ছেলেরা চেয়ার ও গজারি লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারামারি করছে। অন্যদিকে মাইকে বারবার “দুনিয়ার মজদুর। এক হও লড়াই কর” বলে কেউ কেউ শ্লোগান দিচ্ছে। ভাবনায় পড়লাম, আসলে কারা মারামারি করছে? আসরের পূর্বে কিঞ্চিত ১৪ দল বিরোধী বক্তব্য আর আসরের পর কমিউনিস্টদের শ্লোগান! কিছুটা অদ্ভুতই লাগলো। অল্প কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে দেখতে চেষ্টা করলাম, আসলে কি ঘটছে!
ইতিমধ্যে একটা রিকশা পেয়ে আম্বরখানা যাবে কিনা জানতে চাইলে রাজি হলো। ফলে আমরা বিকল্প রাস্তা দিয়ে বাসার পথে যাত্রা করলাম। এরই মধ্যে পিছনে তাকিয়ে দেখি, একটু পূর্বে যেখানে দাঁড়িয়ে রিকশায় উঠেছি, সেখানে ইতিমধ্যে দৌড় শুরু হয়ে গেছে। বাসায় আসার পর অনলাইনে আসতেই দেখলাম, “সিপিবি-বাসদের সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলা। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ আহত ১০”।
আগে জানতাম, কাক কাকের গোশত খায় না। কিন্তু এই প্রবাদটা যে সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় আজ বুঝতে পারলাম। এখন মাত্র ১০ জন আহত হওয়াতে কিছুটা খারাপ লাগছে। এতো অল্প সংখ্যা দিয়ে কি ভালোমতো গল্প করা যায়। সংখ্যাটা যদি অন্তত হাজার হতো। অবশ্য সিপিবি-বাসদের সদস্য পুরোদেশে হাজার আছে কিনা এটাও ভাবনার বিষয়………… ফেসবুকে প্রকাশিত