(১)
রাজনৈতিক দলের থেকে যোজন যোজন দূরত্বে থাকার অভ্যাসটা অনেকদিনের। আমার ভাবনায় বাংলাদেশে ধর্মীয় রাজনীতির অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সবটাই ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি ভিন্ন কিছু মনে হয় না। দূরত্বে অবস্থান স্বত্বেও আগ্রহভরে খবর নেই। ভালো মন্দ সবকিছুই হৃদয়ে স্পর্শ করে। বাস্তবতাকে সামনে রেখে কষ্ট করে ভাবতে চেষ্টা করি, একদিন এদেশে ইসলামের পতাকা উড়বে।
(২)
সম্প্রতি পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় দলগুলোর ইফতার মাহফিলে দেশসেরা আলেমদের সামনে রেখে সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে প্রধান অতিথির মর্যাদায় ভূষিত করা, চাঁদা কালেকশন নমুনা দেখে বেশ হতাশ।
আমার অভিজ্ঞতাটাই শেয়ার করি। আজ পর্যন্ত একাধিক সংগঠনকে ইফতার উপলক্ষে ৮০০ টাকা দিলাম। টাকা দিতে মন সায় দেয়নি। কিন্তু টাকা দেয়ার জন্য জোর করে ধরলো। আর্থিক ব্যাপারে টানাহেঁচড়া করতে আমার আবার খারাপ লাগে। (রিকশা ওয়ালার সাথে ঝগড়া করতে পারি না বলে কাছের বন্ধুরা আমার উপর বেশ ক্ষ্যাপা!) অনিচ্ছা স্বত্বেও দিয়ে দিলাম।
দুঃখজনক হচ্ছে একটা সংগঠনও টাকা আদায় বাবদ রশিদ দেয়নি। আমিও প্রশ্ন করিনি রশিদ নেই কেন? টাকাটা আপনি নিজের কাজে আবার লাগাবেন নাতো? খামোখা বিব্রত করে লাভ কি!
কিন্তু মনের ভেতর যেসব ভাবনা উঁকি দেয়, সেসব থামানোর সাধ্য যে অধমের নেই। সন্দেহপ্রবন মন বারবার আওয়াজ দিয়ে বলে, আচ্ছা টাকাটা যে নিলো, সেতো ইফতারে না লাগিয়ে নিজের কাজেও টাকাটা লাগাতে পারে! সংগঠনের কাছে কতো টাকা চাঁদা করলো সেই হিসেব না দিলেও পারে! আরো হাবিজাবি কতো কি………
দুর্নীতিতে বাংলাদেশ বহুবছর ধরে প্রথম স্থান লাভ করে আসছে। তাই বলে ধর্মীয় সংগঠনগুলোতে স্বচ্ছতা বলে কিছু থাকবে না এটা কেমন কথা!
(৩)
একটি ছাত্র সংগঠন …. টাঁকা চাইলো। … দিলাম। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, একটা দাওয়াত নামা পর্যন্ত দিয়ে যায়নি। তারিখ বলেছিলো কিনা মনে করতে পারছি না। আরেকটি ছাত্র সংগঠনের স্বল্প পরিচিত দায়িত্বশীল তাঁদের কলেজ শাখার ইফতারের দাওয়াত দিতে বাসায় এসে আমায় না পেয়ে কার্ড দিয়ে গেছে। রাজনীতিতে মাদরাসা স্কুলের পার্থক্যটা বুঝানোর একটা উদাহরণ কতো সহজে পেয়ে গেলাম।
*কার্ড বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ না। কারণ আমি কোনো ইফতার মাহফিলে যাইনি। যাবোও না। বাসায় এসে ইফতারের সময় নেই আর রাজনৈতিক দলের ইফতারে যাবো সেতো বহুত দুর কি বাত। শুধু রাজনীতিকে ঘরের বিষয় মনে করার রীতিটা আমরা ছাড়তে পারিনি বুঝানোর জন্য বিষয়টা সামনে আনলাম।
(৪)
থাকুক। বেশী কিছু বললে অনেকেই মাইন্ড খাবেন। শুধু এটুকু প্রত্যাশা করি, নিয়ম নীতির অনুস্মরণ করাটা যেকোনো সংগঠনের জন্য জরুরী এই সহজ কথাটা যেনো আমাদের রাজনীতিবিদদের মাথায় থাকে। সেই সাথে রাজনীতিতে দলীয় লোকজনের বাইরে চাঁদাবাজি চিরতরে নিষিদ্ধ করা হোক এই প্রত্যাশাও রইলো। ওয়াজ মাহফিলে জান মাল আল্লাহর রাস্তায় দেয়ার কথা বলে জাকাত/সদকার টাকায় এমপি, মন্ত্রিত্বের স্বপ্ন দেখা নিশ্চয় খুব একটা ভালো কাজ না। ২৮ জুলাই, ২০১৩ ফেসবুকে প্রকাশিত