সাত বছর পূর্বে হাফিজী মাদ্রাসাকে আলবিদা বলে এসেছি। তারাভী পড়ানোর বয়স নয়। প্রতি বছর রমযান আসলেই যেসব বন্ধু হাফিজ নয় তাদের বলি: আহা! তোমরা কতো স্বাধীন। তারাভী পড়াতে গেলে ইমামদের দায়িত্ববোধ, সময়ের গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয় গভীরভাবে অপলব্ধি করি। প্রতিদিন সময়মতো মসজিদে যাওয়া; আসরের পরে তিলাওয়াত শুনানো; তারাভির নামাজ পড়িয়ে বাসায় চলে আসা। জীবনটাকে একটা বৃত্তের মধ্যে আবর্তিত মনে হয়।
হিফজ পড়াকালীন সময়ে আমার বয়সী ছেলেরা যখন নামাজ ছেড়ে বাইরে খেলায় ব্যস্ত থাকতো; আমি তখন একেবারে সামনের কাতারে নামাজ পড়ার জন্য আজানের সাথে সাথে মসজিদে ছুটতাম। তাহাজ্জুদের নামাজে ইমামের ঠিক পিছনে দাঁড়ানোর জন্য রাতের অন্ধকারে লাইট নিয়ে সময়ের পূর্বে ছুটে যেতাম। খতম ছুটে যাবে এই ভয়ে মসজিদ পরিবর্তন করা, কারো বাড়ীতে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিতাম। এখন বারবার মনে হয়, মাত্র একটা রমযান যদি তারাভি না পড়িয়ে প্রতিদিন পৃথক মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারতাম। পরিচিত মানুষদের বাসায় ইফতার করতে পারতাম। হাফিজ বন্ধুদের চমকে দিতে পারতাম। কিন্তু চাইলেই তো সব চাওয়া পাওয়ায় পরিণত হয় না। আমাকেও তাই প্রতি বছর তারাভি পড়াতে হয়।
এমনিতে আমার চাহিদা খুব কম। আচ্ছা; আমার এই চাওয়াটা কি খুব খারাপ? মাত্র একবার কি ভিন্ন কিছু স্বাদ গ্রহণ করতে পারি না?
*তারাভী পড়াতে যে স্বাদ, সেটা আমার হতাশাকে চোখ মেলতেই দেয় না। ফলে আমি যেটুকু ব্যথিত তারচেয়ে অধিক আনন্দিত যে, আমি অল্প কিছু মিস করলেও বড় কিছু পেয়েছি এবং আলহামদুলিল্লাহ্ এখনো পাচ্ছি। ফেসবুকে প্রকাশিত