হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বর্তমান সময়ের সর্বাধিক আলোচিত! একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। কওমি মাদরাসা কেন্দ্রিক এই সংগঠন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি হফিজাহুল্লাহ’র নেতৃত্বে কয়েকমাস থেকে ধর্মসংক্রান্ত একাধিক দাবী নিয়ে আন্দোলন করে আসছে।
বিগত ০৫ মে ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরে সংগঠনটি ঢাকা অবরোধ পরবর্তী সমাবেশে অবস্থান কর্মসূচী গ্রহণ করলে সরকার রাতের আঁধারে নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী ভণ্ডুল করে দেয়। নির্যাতিত নিপীড়িত এই সংগঠনটি এতো ত্যাগ স্বীকার সত্ত্বেও অভিযোগের কাঠগড়া থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি। কুরআন, হাদীসের সেবা যাদের জীবন ধর্ম, তাঁদেরকেই বয়ে বেড়াতে হচ্ছে কুরআন পুড়ানোর অপবাদ। প্রকৃতির অন্তরঙ্গ বন্ধু গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ, পুলিশ/সাধারণ মানুষের উপর হামলা, লুটপাটসহ নানা অভিযোগে প্রমাণ বিহীন চলছে দলটিকে অপদস্থ করার নির্মম চক্রান্ত।
জ্ঞানী-জন বলেন, স্রষ্টা যাদের আপন, ইবলিশে তাঁদের ভয় কিসের! ধীরে ধীরে অচলাবস্থা কাঁটিয়ে স্বরূপে ফিরছে হেফাজতে ইসলাম। বেরিয়ে আসছে শাপলা চত্বরে রচিত সেই মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের দুর্লভ ভিডিও-চিত্র। বিভিন্ন স্থিরচিত্রের মাধ্যমে উন্মোচিত হচ্ছে অজানা রহস্যের। উপরে যে ছবিটি দিলাম, সেখানে একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো, এদের কি(?) আপনার কওমি মাদরাসার ছাত্র মনে হয়? হেফাজতে ইসলাম সম্পূর্ণ কওমি কেন্দ্রিক একটি সংগঠন। এর বাইরে কেউ যদি নিজেকে হেফাজত কর্মী বলে দাবী করে (সর্বোচ্চ সমর্থক বলতে পারে) তবে সেটা বিশ্বাস করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।
কওমি মাদরাসা সম্বন্ধে যাদের ধারণা নেই,তাদের উদ্দেশ্যে বলি; দেশের প্রায় চল্লিশ হাজার ছোট বড় কওমি মাদরাসা ভ্রমণ করে একজনও দাঁড়ি টুপি বিহীন ছাত্র,শিক্ষক খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। শার্ট প্যান্ট পরা কওমি মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক খুঁজে পাওয়া শুধু অসম্ভব নয় অকল্পনীয়ও বটে।
ইতিহাস বলে,পার্থিব শিক্ষামুক্ত কওমি মাদরাসাগুলো আদর্শের প্রশ্নে আপোষহীন। শত ঝড়ের মুখোমুখি হয়েও এরা নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভুলে যায়নি। তথাকথিত আধুনিকতার ছোঁয়ায় নিজেদের ভাসিয়ে দেয়নি। অস্ত্রের রাজনীতির বিন্দুমাত্র স্পর্শ কওমি মাদরাসা পায়নি। শিক্ষকদের জিম্মি, ক্যাম্পাস অবরোধ, আধুনিকতার নামে অশ্লীলতা কওমি মাদরাসাগুলোতে স্বপ্নেও বেড়াতে যায়নি।
তাই ভাবুক মানুষদের মনে প্রশ্ন জাগে, নিরীহ মাদরাসা ছাত্ররা কিভাবে হামলা করতে পারে? পরিবেশের বন্ধু গাছ কাটতে পারে? মানুষের ক্ষতি করতে পারে? তবে কি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য আছে? উপরের ছবিটা ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখুন, শার্ট প্যান্ট পরা অনেকগুলো মানুষ মাদরাসা ছাত্রদের পাঁশে আছে। ভালোভাবে দেখলে বুঝতে পারবেন, গাছ কাটতে দাঁড়ি টুপি-ওয়ালা ছাত্রদের চাইতে এদের আগ্রহটাই বেশী। তবে মাদরাসা ছাত্রদের সাথে মিশে অন্য কেউ নাশকতা চালিয়েছে এমনটি কি প্রমাণিত হয়ে গেলো না? বন্ধু সেজে কুকর্ম করে হেফাজতে ইসলামকে সাধারণ মানুষের কাছে উগ্রপন্থী সংগঠন প্রমাণ করতে চেয়েছে এমনটি কি স্পষ্ট হয়ে গেলো না? হেফাজতে ইসলাম জায়নামাজ, তসবি, ছোট লাঠি সাথে রাখতে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলো। মাদরাসা ছাত্রদের অনেকের সাথে তা ছিলও। এখন কেউ যদি নিজেদের ইচ্ছেমতো অস্ত্র সাথে নিয়ে হেফাজতের কর্মসূচীতে যোগ দেয় তবে তার দায় হেফাজত নেবে কোন যুক্তিতে?
এই ছবিটা দেখে এখন আপনি যৌক্তিক বিবেচনায় বলুন তো, যেহেতু সরকার প্রমাণ দিতে পারেনি, সুতরাং অন্য কেউ (গাছ কাঁটার মতো) কুরআন পুড়িয়ে হেফাজতের উপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছে এমনটি কি প্রমাণিত হয়ে গেলো না? অন্য কেউ পুলিশের উপর হামলা করে হেফাজতের কাঁধে চেপে পার পেতে চাচ্ছে, এমনটি কি এখন আর ভাবতে অবাক লাগে? অপকর্ম সাধনকারী ছাত্রলীগ হতে পারে, ছাত্রদল হতে, ছাত্রশিবির হতে পারে; কিন্তু এরা যে কওমি মাদরাসার নয় সেটা সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত। “বৃক্ষ তোমার নাম কি ফলে পরিচয়” প্রবাদ মাথায় রেখে নিজের ভাবনাকে কাজে লাগান।
*আরো সত্য বেরিয়ে আসবে ইনশাল্লাহ। ধৈর্য সহকারে সুদিনের অপেক্ষায় থাকুন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং কেউ নিরাশ হবেন না। ফেসবুকে প্রকাশিত