আরবী অভিধানে গালি দেয়ার অর্থ হলো, কোনো বস্তু সম্পর্কে এমন শব্দ ব্যবহার করা, যাদ্ধারা ঐ বস্তুটিতে দোষত্রুটির সৃষ্টি হয়।
ধর্ম-বিদ্বেষী নাস্তিকদের ফাঁসির দাবীতে দেশ আজ উত্তাল। হেফাজতে ইসলাম যে দাবী আজ সামনে নিয়ে আসছে, সেটা তাঁদের নিজস্ব কোনো দাবী নয়। নাস্তিকদের সাথে মুসলমানদের সংগ্রাম ততোক্ষণ পর্যন্ত নেই, যতক্ষণ তারা নিজেদের নাস্তিকতা ঘরের ভেতর রাখবে। কিন্তু যখন প্রকাশ্যে কেউ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানব রাসূল (সা:) কে গালি দিবে, তখন মুসলমানগণ ঘরে বসে থাকবে, এমন নির্বোধ টাইপ ভাবনা হেমায়েতপুরের বাসিন্দা ছাড়া কেউ ভাববে না। মাযহাবের ইমামগণ একমত যে, নবীকে গালিদাতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কিছু নয়।
গালি দেয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। নবীদের গালি দেওয়া কুফুরী।
শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, যদি কোনো মুসলমান কোনো নবীকে গালি দেয়, তবে সে কাফির ও মুরতাদ হয়ে যায়। আর নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়া অন্যান্য নবীদেরকে গালি দেয়ার অপরাধের চেয়ে অনেক বড়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান ও মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। নবীদেরকে গালিগালাজকারী কাফির এবং তাকে হত্যা করা বৈধ।
মুহাম্মাদ (সা:) কে গালি-গালাজকারী সম্পর্কে চার ইমামের মাযহাব।
আল্লামা খায়রুদ্দীন রমলী হানাফী (রহঃ) ফাতাওয়ায়ে বাযযাযিয়াতে লিখেন, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়, শাস্তি হিসেবে তাকে হত্যা করে ফেলা জরুরী। কখনও তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না; চাই সে তাওবা গ্রেফতারের পরে হোক বা গ্রেফতারের পূর্বে নিজে নিজে তাওবা করে নিক। তাদের এই শাস্তির ব্যাপারে মুসলমানদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই। এ অপরাধের সম্পর্ক হক্বুল ইবাদ বা বান্দার হক্বের সাথে। এটা কেবল তাওবার দ্বারা শেষ হয় না। যেমন চুরি, শুধুমাত্র তাওবা দ্বারা শেষ হয় না।
এটা হলো হযরত আব্বু বকর (রাযি:), ইমাম আব্বু হানিফা (রহঃ), কুফাবাসী উলামায়ে কেরাম, ইমাম মালিক (রহঃ) এর মাযহাব।
আল্লামা শামি (রহঃ) লিখেন, সমস্ত জ্ঞানী-গুনীগন একমত যে, নবী কারীম (সা:) এর সাথে যে বেয়াদবি করে তাকে হত্যা করে ফেলা ওয়াজিব। ইমাম মালিক (রহঃ), ইমাম আবুল লাইস (রহঃ), ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ), ইমাম ইসহাক (রহঃ), ইমাম শাফেয়ী (রহঃ), এমনকি ইসলামের প্রথম খলীফা আবূ বকর সিদ্দীক (রাযি:) সবাই একমত যে, এ বেয়াদবের তাওবা ক্ববুল হবে না।
হানাফী মাযহাবের একজন নির্ভরযোগ্য ফক্বীহ, ইমাম ইবনে হুমাম (রহঃ) লিখেন, যে কেউ রাসূলুল্লাহ (সা:) এর সাথে শত্রুতা রাখবে, সে মুরতাদ হয়ে যাবে। আর যে গালি দিবে, সে তো অবশ্যই মুরতাদ হয়ে যাবে। আমাদের মত হলো, এমন ব্যক্তিকে শাস্তি হিসেবে অবশ্যই হত্যা করতে হবে। তার তাওবা ক্ববুল করে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।
আল্লামা বুরহানুদ্দীন (রহঃ) আল-মুহীত কিতাবে লিখেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে যে বেয়াদবি করে, তার তাওবা আল্লাহ তা’আলার দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে না এবং মানুষের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে না।
উপরোল্লিখিত প্রমাণাদি দ্বারা এ কথা প্রমাণিত যে, রাসূল (সা:) এর সাথে শত্রুতা পোষণ করা, তাঁকে গালি দেয়া, ইত্যাদি অপরাধ তাওবা দ্বারা শেষ হবে না। বরং এরূপ ব্যক্তির একমাত্র শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। চলবে >
***অনেকদিন থেকে এই বিষয়ে লেখা খুঁজছিলাম; আজ শব্দনীড় ব্লগ থেকে লেখাটা অনুমতি ছাড়াই হুবহু কপি করে দিলাম। মূল লেখাটা এখানে দেখুন ফেসবুকে প্রকাশিত লেখাটা এখানে দেখুন