পরিচিত এক জ্ঞানী ব্যক্তি,(যাকে মন থেকে সম্মান করি) নাম প্রকাশ করতে মন চাইছে না,কিছুদিন পূর্বে একটা নোটে বিভিন্ন বিষয়ের সাথে তাবলীগ জামাত সম্পর্কে নিম্নোক্ত কথাগুলো বললেন। ইতিপূর্বে লেখার কিছু অংশ পড়ে মন খারাপ হয়েছিলো,সেদিনও হলো। যদিও লেখতে জানি না,তবুও মনে হলো সাধ্যানুযায়ী কিছু লিখা উচিত। সময় সুযোগ করে আরো লেখবো ইনশাল্লাহ।
———————————————
৪) “ইসলামের চিরদিনের শত্রু অভিশপ্ত ইহুদিদের কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলেও তাবলীগ জামায়াত কাজ করতে পারে – অথচ তা ইসলামের শত্রুদের এমন এক সংরক্ষিত দুর্গ যেখানে যাওয়া দূরের কথা, বাংলাদেশ থেকে টেলিফোন করা বা একটি চিঠি পর্যন্ত পৌঁছানোর উপায় নেই। আমেরিকা যাদের কথায় ওঠ-বস করে তারা এতো ভোদাই নয় যে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে কাউকে তাদের অন্দরমহলে ঢুকে পড়তে দেবে। “>
৪) ইসরাইলে তাবলীগ জামাতের কাজ করতে পারা তাদের বাতিল হবার দলীল কিভাবে হতে পারে? ইউরোপ আমেরিকায় বাহ্যিক অবস্থার উপর নির্ভর করে কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নাগরিক অধিকার তারা যথাযথ সংরক্ষণ করে। আপনি কি জানেন ইসরাইল ফুটবল দলের অধিনায়ক একজন মুসলিম? আপনি জানেন কি সেখানে কয়েক বছর পূর্বে ইহুদীদের চাইতে মুসলিম বেশি ছিল! আপনার হাতে অস্ত্র না থাকলে আপনাকে তাদের প্রধানমন্ত্রীও সরাসরি সন্ত্রাসী বলতে পারবে না। আমি আপনি সবাই জানি তারা মুসলমানদের সাথে কি করছে। কিন্তু তারা এ যুদ্ধকে ধর্ম যুদ্ধ হিসেবে কখনোই দাবী করে না। এটা তাদের কৌশল। তারা দেখায় যে তারা বেচে থাকার জন্য লড়াই করে। ইহুদীবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়ছে এমনটি আপনি তাদের মুখে শুনবেন না! তারা বাহ্যিক ভাবে সব ধর্মকেই সম্মান দেয়ার কথা বলে। তাদের দাবী অনুযায়ী তো তাদের যুদ্ধ ফিলিস্তিনের সাথে,মুসলমানদের সাথে নয়। তাবলীগ জামাতকে কোন যুক্তিতে তারা বাঁধা প্রদান করবে। নামে ইয়াহুদি রাষ্ট্র হলেও সেখানে তো অন্যান্য ধর্মের মানুষও বাস করে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে ইসরাইলের কিছু জায়গা ইহুদি,খৃস্টান,মুসলমান সবার কাছেই পুণ্যভূমি। ভ্রমণ করে এসেছেন আমার এক আত্নীয় বললেন প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটক ইসরাইল গমন করে। তাদের আয়ের বড় একটা অংশও নাকি পর্যটন খাত থেকে আসে। এমনকি বায়তুল মুকাদ্দাস,যেখানে মুসলমানেরা নামাজ আদায় করে থাকেন; সরকার নিয়োজিত বাহিনী লোকজনের নিরাপত্তায় সবসময় থাকে। এমনকি বললেন যে,ইসরাইলে বসবাসরত মুসলমানেরা তাদের পূর্ণ অধিকার পেয়ে থাকেন।
———————————————
৫) অথচ ইসলামী দাওয়াতের বৈশিষ্ট্য হলো বিরোধিতার সম্মুখীন হওয়া। নবী-রাসূল থেকে শুরু করে যুগ যুগ ধরে সকল দাঈ ইলাল্লাহকে তাগূতিশক্তির নানারূপ নির্যাতন ও কঠিন বাধা মোকাবেলা করতে হয়েছে
৫) আপনার এই কথাগুলোর উপর আফসোস করা ছাড়া কিছু বলার ভাষা নেই। সমালোচনা একটা শিল্প,যদি যথাযথ ব্যবহার করা যায়! সমালোচনা করার পূর্বে অন্তত ৩ দিনের জন্য মারকাজে অবস্থান করলে হয়তো এমনটি লিখতেন না। কিছু কারগুযারী শুনলে হয়তো বুঝতে পারতেন যে কম্পিউটারের সামনে বসে লেখা যত সহজ; সঠিক পন্থায় দ্বীনের কাজ করা তাঁর চেয়েও অধিক কঠিন। রাশিয়া,চীন এমনকি ভারতেও তাবলীগিরা বিভিন্ন সময় কঠোর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মায়ানমারে তাবলীগিদের পুরো জামাতকে হত্যার ঘটনাতো কিছুদিন পূর্বেই ঘটলো। তাবলীগ জামাতের কারগুজারী নামে বইও বাজারে পাওয়া যায়। পড়ে দেখতে পারেন। বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনার হাতে।
———————————————
*ক্ষেত্রবিশেষ কঠোর ভাষা ব্যবহার করায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। February 7, 2013