ধর্মের প্রতিটি বিষয় আল্লাহ’র রাসূল (সা:) –এর মাধ্যমে উম্মতের কাছে পৌঁছেছে। পরবর্তীতে যদিও বিভিন্ন পারিভাষিক নামে বিভক্ত হয়েছে, কিন্তু সবকিছুর ভিত্তিমূল রাসূল (সা:)। যেমন ফিক্বাহ, তাসাওউফ, হাদীস, তাফসীর, উসূল, হিকমাত, কালাম, রাজনীতি বর্তমানে স্বতন্ত্র অবস্থানে থাকলেও সবকিছুর সূচনা হুযুর (সা:) থেকে হয়েছে। উলামায়ে দেওবন্দ সবগুলো বিষয়কেই গ্রহণ করেছেন। এর ফলে ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) পরবর্তী উপমহাদেশে মুতাকাল্লিম, ফক্বীহ, সূফী, মুহাদ্দিস, মুজতাহিদ, হুকামা হিসেবে যারা খ্যাতি অর্জন করেছেন, তাঁরা উলামায়ে দেওবন্দের সন্তান।
উলামায়ে দেওবন্দ নির্দিষ্ট একটি বিষয়কে গ্রহণ করে থেমে যাননি। এমন হয়নি যে, তাঁরা তাসাওউফ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় হাদীসের সেবায় অংশ নেননি। হাদীস নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাসাওউফ বা কালাম শাস্ত্রে অবদান রাখেননি। ফিক্বাহ শাস্ত্রে কাজ করতে গিয়ে অন্য শাস্ত্রকে অবহেলা করেছেন। প্রতিটি বিষয় সূচনালগ্নে যেরূপ শুধুমাত্র রাসূল (সা:) –এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলো; এটি উলামায়ে দেওবন্দের বৈশিষ্ট্য যে, তাঁরাও দ্বীনের প্রতিটি স্তরে সমভাবে কাজ করেছেন। এজন্য উলামায়ে দেওবন্দের কেউ মুহাদ্দিস হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তিনি ফিক্বাহ থেকে দূরত্বে অবস্থা করছেন। ফক্বীহ মানে এই নয় যে, হাদীস শাস্ত্রে তাঁর খিদমাত নেই।
সাহাবায়ে কেরামের মাঝে বিভিন্ন ধরণের মানব একত্রিত হয়েছিলেন। তাঁদের পরস্পরের মাঝে প্রীতির সম্পর্ক ছিলো। ছিলো একে অপরকে সম্মানের মানসিকতা। তাঁদের মাঝে কুরআন, হাদীস, ফিক্বাহ, তাসাওউফ, উসূল, কালাম, নেক আমল, উত্তম চরিত্র, খোঁদা-ভীরুতা, মানবসেবা, মানবতার উন্নতির ভাবনা সবকিছুই একত্রিত হয়েছিলো। এই কারণে উম্মতের মাঝে সাহাবায়ে কেরামই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য জামাত হিসেবে স্বীকৃত।
পরবর্তীতে প্রত্যেক যুগে উম্মতের একটি দল সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ করেছেন। ইতিহাস এবং বাস্তবতা সাক্ষী; উলামায়ে দেওবন্দ নিজেদের পুরো প্রচেষ্টাকে রাসূল (সা:) ও সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ ও অনুকরণের মাঝে ব্যয় করেছেন এবং করছেন। এটি নিছক কোনো দাবী নয়, বরং প্রমাণাদি সমৃদ্ধ এমন এক বাস্তবতা, যার অস্বীকারকারী নিশ্চিতভাবে ইতিহাসের কাঠগড়ায় অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। ফেসবুকে প্রকাশিত