জ্ঞাণগত দাসত্ব কাফির গোষ্ঠীর এমন সুচারু পরিকল্পনার ফসল যে, দাসত্ব অর্জনকারী জনগোষ্ঠী ঠেরই পায় না, তারা গোলাম হিসেবে বসবাস করছে। যেমন উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন সময় পরিকল্পিতভাবে এমন আধুনিক এক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়; যার প্রভাবে বাহ্যত স্বাধীন থাকলেও এদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে মেধাগতভাবে দাস হয়ে আছে, কিন্তু নিজেদের দাসত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারছে না। ইলমে মানতিকের ভাষায় যাকে “মুরাক্কাবে জাহিল” বলা যায়।
এই মানসিক দাসত্বের প্রভাবই এমন যে, দাসত্ব বরণকারী গোষ্ঠী ভালোকে মন্দ, মন্দকে ভালো, উপকারকে অপকার, অপকারকে উপকার, বন্ধুকে শত্রু আর শত্রুকে বন্ধু মনে করে থাকে।
মানসিক দাসত্ব একটি জনগোষ্ঠীর ভাবনার ক্ষমতাকে পুরোপুরি বিনষ্ট করে দেয়। ফলে তারা অবস্থাকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে না। নিজেদের ভালোমন্দ ভাবতে পারে না। তাদের নেতৃত্বে থাকা গোষ্ঠী তাদের ব্যাপারে যা ভাবে, তাই নিজেদের জন্য গ্রহণ করে নেয়।
বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে, মানসিক এই দাসত্ব মুসলমানদের কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী জীবন পরিচালনার পথে বিপত্তির সৃষ্টি করছে। নিজেদের ভালোমন্দ সম্পর্কে কুরআন হাদিসের আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মুসলিম শিক্ষিত শ্রেণীর অধিকাংশই এখন পাশ্চাত্যের চাকচিক্যকে নিজেদের জীবন পথের আদর্শ ভাবছে। লেখক শ্রেণী পাশ্চাত্যের অনুকরণে সাহিত্য চর্চা করছে। মিডিয়া গোষ্ঠী পাশ্চাত্যের ভাবনাকে নিজেদের উৎস-মূল ভেবে অনুসরণ করছে।
এসব কর্মকাণ্ডের ফলে মুসলিম সমাজের বিচ্ছিন্নতা কেবল বৃদ্ধিই পাচ্ছে। কুরআন হাদিসের আলোকে কিয়ামত পর্যন্ত যাদের জাত শত্রু আর জন্ম শত্রু থাকবার কথা ছিলো, তারাই বন্ধু হিসেবে আসন গ্রহণ করছে আর একই কালেমার অনুসারী একে অপরকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু ভাবছে। চলবে……… ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ফেসবুকে প্রকাশিত