বিগত ০৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা মাদরাসায় গিয়েছিলাম। “রেঙ্গার সাব” নামে পরিচিত, শায়খুল ইসলাম সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহঃ) –এর খলীফা, শায়খ মাওলানা বদরুল আলম (রহঃ) –এর নাতী, ইংল্যান্ড প্রবাসী মাওলানা নোমান ভাই আমার বোন-জামাইয়ের বন্ধু। সেই সূত্রে তিনি আমাকে বেশ স্নেহ করেন। সম্প্রতি তিনি দেশে এসেছেন। নোমান ভাইয়ের দাওয়াতে মূলত রেঙ্গায় যাওয়া।
দুপুর ১২-০০ ঘটিকার সময় রেঙ্গা মাদরাসায় পৌঁছুলাম। মাদরাসার পুকুরপাড়ে নাইবে মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান (দা: বাঃ) ও নোমান ভাই বসে বসে মাছ ধরছিলেন। আমরা সেখানে গিয়ে বসলাম। মাছ ধরা দেখতে দেখতে পুকুর ঘাঁটেই হালকা নাস্তা হলো। অদ্ভুত সুন্দর কথাবার্তা শুনতে শুনতে কিভাবে যে অর্ধ-ঘণ্টা পেরিয়ে গেলো বুঝতে পারিনি।
আধঘণ্টা পর মাদরাসা ঘুরে দেখলাম। সুপরিসর লাইব্রেরী, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব দেখে বেশ ভালো লাগলো। দেখলাম, প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামেয়ার নতুন ভবন তৈরির কাজ চলছে। অতঃপর নাইবে মুহতামিম সাহেবের রুমে কিছু সময় বসে তাঁদের বাড়ির পথে রওয়ানা দিলাম।
বাড়িতে যাওয়ার কিছু সময় পর জামেয়ার মুহতামিম “মাওলানা শামসুল ইসলাম খলীল (দা: বাঃ)” –এর সাথে সাক্ষাত হলো। অদ্ভুত হলেও সত্য যে, আমি ইতিপূর্বে কেবল মুহতামিম সাহেবের নাম জানতাম। কিন্তু কখনো দেখিনি। রেঙ্গা মাদরাসায় কয়েকবার গেলেও বাড়িতে যাওয়া হয়নি।
ধবধবে সাদা রঙ আর বাবরি চুলের অধিকারী মুহতামিম সাহেবকে দেখে ভাবছিলাম, ইনি মনে হয় ভিনদেশী কেউ! আমার ধারণা, তাঁর উজ্জ্বল চেহারা যে কাউকে দ্বিধায় ফেলে দিবে।
মোসাফাহার পর তিনি চলে গেলেন। আমরা গল্পে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। কথাবার্তার সাথে চললো রকমারি নাস্তা। অতঃপর রুমের বাইরে এসে এয়ারগান দিয়ে কিছুক্ষণ চললো শখের শুটিং প্র্যাকটিস।
যাক, আমাদের গমন উপলক্ষে আগের দিন পাখি শিকার হয়েছিলো। যোহরের নামাজ আদায় শেষে সেই পাখি-সহ রকমারি আইটেম দিয়ে উদর ভর্তি করলাম।
খাবার-দাবার শেষে আবার মুহতামিম সাহেব আসলেন। আমার জন্ম পরবর্তী কিছু স্মৃতি বর্ণনা করলেন। বিদায় নেবার সময় যখন মোসাফাহার জন্য হাত ধরলাম; আজীবন স্মৃতিতে রাখার মতো কিছু কথা বললেন (কিছু স্মৃতি নিজের জন্য রাখতে চাই বলে আর লিখলাম না) এও বললেন; এরপর থেকে যদি তুমি এই রোড দিয়ে যাওয়ার সময় আমায় দেখে না যাও, তবে গোনাহগার হবে। আমি বললাম; ইনশাল্লাহ এখন থেকে আর ভুল হবে না। যখনি এদিকে আসবো, আপনাকে দেখে যাবো।
গাড়িতে উঠলাম। দেখলাম দৃষ্টির আড়াল হওয়া পর্যন্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলেন। আমার চোখটা পানিতে ঝাপসা হয়ে উঠলো। বুঝতে শেখার পর প্রথম দেখা। কিন্তু কি অদ্ভুত মমতা!!! ফেসবুকে প্রকাশিত