উপমহাদেশের কওমী মাদরাসাসমূহের মারকায হচ্ছে দারুল উলূম দেওবন্দ। ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত এই জামেয়ার খিদমাতের ইতিহাস বিশ্বের বুকে বিরল। দারুল উলূম যেসব রত্নের জন্ম দিয়েছে, বিশ্বের অন্য কোনো বিদ্যালয় তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি। দ্বীনী খিদমাতের প্রশস্ত ময়দানে দারুল উলূমের অবদান, তরয-তরীক্বা, রীতি-নীতি, পরিচালনা পদ্ধতি সবকিছুই অনুসরণ যোগ্য।
বিগত (১৫,১৬ মে) বৃহস্পতি ও শুক্রবার প্রতিবছরের ন্যায় দারুল উলূমের পুরনো দারুল হাদীসে অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক ইনআমী মজলিস। যাকে বাংলায় পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বলা হয়।
এমন অনুষ্ঠান হয়তো অনেক প্রতিষ্ঠানেই হয়। কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সাথে দারুল উলূমের পার্থক্য হচ্ছে; দারুল উলূমের মক্তব বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি ছাত্র ইনাআমী মজলিসে ইনআম-প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ দারুল উলূমের ছাত্র হবার সুবাদে সবার জন্য রয়েছে পুরস্কার।
যেমন এবার বিগত বছরের প্রায় চার হাজার ছাত্রের হাতে তুলে দেয়া হলো পুরষ্কার। তবে সবার পুরস্কার সমান নয়। ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পুরস্কারের মাঝে পার্থক্য হয়ে থাকে। যেমন এবার প্রথম-স্থান অধিকার করাতে সবচেয়ে বেশি পুরষ্কার পেয়েছেন বাংলাদেশী মামূনুর রশিদ কাসেমি।
পুরষ্কারের তালিকায় থাকে বিভিন্ন মূল্যমানের বই। সবচে বড় কথা হলো, এতে প্রায় সবাই তারিখে দারুল উলূম পায়। যার ইশারা হলো, উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কিছু করতে হলে দারুল উলূমের ইতিহাস জানতে হবে। পূর্বসূরির ইতিহাস যে জাতি যতো বেশি জানে, তারাই ততো অগ্রগামী হয়।
ছোট শিশুদের যখন পুরস্কার দেয়া হয়, তখন নিশ্চয় তাঁরা বেশ আনন্দ পায়। হৃদয় থেকে খুশীতে হেসে ওঠে। কখনো দেখিনি, কিন্তু ভাবতেই অন্যরক্ম আনন্দ অনুভব করছি।
আমাদের দেশেও যদি ছাত্রদের হাতে এভাবে পুরস্কার দেয়ার প্রথা চালু হতো, তবে ছাত্ররা উৎসাহিত হতো। বাড়তি উদ্দীপনা নিয়ে পড়ালেখায় মনযোগী হতো। একটু চেষ্টা করলেই হয়তো এভাবে ছাত্রদের উৎসাহ দেয়া সম্ভব।
***তথ্য এবং ছবি সহযোগিতায় মানাযির আহসান ভাই। جزاكم الله خيرا وأحسن إليكم >ফেসবুকে প্রকাশিত