শাইখ ওসামা বিন লাদেন (রাহঃ) –এর ইয়েমেনী স্ত্রী, যিনি অ্যাবোটাবাদ অপারেশনের সময় শাইখের সাথে ছিলেন এবং শাইখ (রহঃ) তাঁর সামনেই শাহাদত-বরণ করেছিলেন, মুহতারামা আমাল আল-সাদাহ একটি সৌদি পত্রিকাকে ইন্টার্ভিউ দিতে গিয়ে আমেরিকান সরকারের কূটনৈতিক বক্তব্য এবং পাকিস্তানী সরকারের অ্যাবোটাবাদ কমিশনের অনুসন্ধানী রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন যে, শাইখ (রহঃ) কে হত্যায় আমেরিকা ও পাকিস্তানী সৈন্যরা জড়িত। একটি যৌথ অপারেশনের মাধ্যমে ঘরের মধ্যে আমেরিকা ও পাকিস্তানী সৈন্যরা হামলা করে।
তিনি স্বচক্ষে দেখা ভয়াবহ দৃশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন; হেলিকপ্টার থেকে অবতরণের পর সৈন্যরা যখন হামলা করে তখন ঘরে অবস্থানরত ভাইয়েরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হন। আক্রমণকারী পাকিস্তানী ও মার্কিন সৈন্যরা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিলো। তারা ঘরের চতুর্দিক ঘেরাও করে পুরো এলাকাকে নিজেদের কবজায় নিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন; সৈন্যরা দ্রুততার সাথে ঘরে প্রবেশ করলে তৎক্ষণাৎ শাইখ ওসামা বিন লাদেন (রহঃ) স্বীয় হাতিয়ার নিয়ে কক্ষের জানালা দিয়ে তাদের মোকাবিলা শুরু করেন। এমতাবস্থায় আচমকা একটি গুলি এসে তাঁর মাথার সামনের দিকে আঘাত হানে। যার ফলে তিনি তৎক্ষণাৎ শাহাদতের অমিয় সুধা পান করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং তাঁর আত্মা স্বীয় মালিকের পানে যাত্রা করে।
তিনি আরো বলেন; আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে শাইখের উপর বিশেষ এই অনুগ্রহ ছিলো যে, পাক-মার্কিন বাহিনীর সাথে লড়াই ও শাহাদত-বরণে মাত্র কয়েকটি মিনিট ব্যয় হয়েছে। এমনকি যখন গুলি আঘাত হানে তখন সামান্য বিলম্ব ছাড়াই তিনি শহীদ হয়ে যান। আল্লাহ তায়ালা তাঁর উপর দয়া করুন!
মার্কিন সৈন্যরা তখন ঘরে প্রবেশ করে যখন দেখলো যে, শাইখ শাহাদত-বরণ করেছেন, তৎক্ষণাৎ তারা শাইখের দেহ নিয়ে হেলিকপ্টারের দিকে যাত্রা করে এবং লাশের সাথে মার্কিন নৌবাহিনীর অফিসাররা আসন গ্রহণ করে। বিলম্ব ছাড়াই তারা হেলিকপ্টার নিয়ে উড্ডয়ন করে; কিন্তু উড়ার কিছুক্ষণ পরই আকস্মিক এক বিস্ফোরণে হেলিকপ্টার পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। হেলিকপ্টারের আরোহীদের সবাই মৃত্যুবরণ করে। শেষ পর্যন্ত তাদের দেহের খণ্ড বি-খণ্ডিত টুকরো ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন; এই কারণে শাইখের দেহ সম্পর্কিত তথ্য গোপন রাখা হয়। কেননা ওবামা এবং হোয়াইট হাউসের বাসিন্দারা পুরো অপারেশন (স্যাটেলাইটের মাধ্যমে) সরাসরি প্রত্যক্ষ করছিলো। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়াতে তাদের চেহারায় ভীতি ছেয়ে যায়। তারা শাইখের দেহকে নিরাপদে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলো; যাতে বিশ্ববাসীকে দেখাতে পারে যে, শাইখ (রহঃ) তাঁদের সামনে নিথর পড়ে আছেন এবং প্রমাণ করতে পারে যে, তারা সফল হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের ষড়যন্ত্রকে মাটিতে মিলিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের অপদস্থ করেছেন তাদের কূটচালকে তাদের দিকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন; এই কারণে তারা সমুদ্রে শাইখের মৃত্যু উৎসব উদযাপন করে এবং সমুদ্রগর্ভে শাইখকে দাফন করার মিথ্যা নাটক রচনা করে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে যে, আল্লাহ তায়ালা শাইখ ওসামা বিন লাদেন (রহঃ) কে জীবিত এবং মৃত উভয় অবস্থায় শত্রুদের চক্রান্ত হতে নিরাপদ রেখেছিলেন।
>যদিও সাক্ষাতকারটি অনেকদিন পূর্বে পড়েছিলাম। আজ শাইখ (রহঃ) -এর শাহাদত দিবস উপলক্ষে মুহতারাম আবু জাকওয়ান ভাই’র জোরালো অনুরোধে লেখাটি অনুবাদ করলাম। আল্লাহ তায়ালা শাইখকে জান্নাতে সুউচ্চ মাক্বাম দান করুক। আমীন। ফেসবুকে প্রকাশিত