নবী কারীম (সা:) বলেন; যে ব্যক্তি একবার “সুবহানাল্লাহ” বলে, আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে (তাঁর জন্য) এমন বৃহৎ একটি বৃক্ষ স্থাপন করেন যে, আরবী বংশজাত ঘোড়া সত্তর বছর দৌড়ুলেও সেই বৃক্ষের ছায়া শেষ হবে না। এই হাদিসটি ফাযাইলে জিকির এবং অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।
পীর জুলফিকার আহমদ নক্বশবন্দী (দা: বাঃ) বলেন; আমি একদিন বসে হিসেব করলাম; চিতা(বাঘ) ঘণ্টায় কিলোমিটার গতিতে দৌড়ুতে পারে। সিংহ ৬৫ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়ুতে পারে। ঘোড়া ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতিতে দৌড়ুতে পারে। সহজ হিসেবের সুবিধার্থে আমরা এটিকে ঘণ্টায় ৫০ মাইল ধরে নেবো।
অতএব যদি ঘণ্টায় ৫০মাইল স্পীডে আরবী বংশজাত ঘোড়া (অর্থাৎ সাধারণ নয় বিশেষ প্রজাতির রেকর্ড স্থাপনকারী ঘোড়া) দৌড়ে তবে ২৪ ঘণ্টায় সেই ঘোড়া (৫০×২৪=১২০০)-একহাজার দুশো মাইল অতিক্রম করতে পারবে। আর এক মাসে সেই ঘোড়া (১২০০×৩০=৩৬০০০)-ছত্রিশ হাজার মাইল অতিক্রম করবে।
যখন ঘোড়া একমাসে ছত্রিশ হাজার মাইল অতিক্রম করতে পারছে, তখন জেনে রাখুন: আমাদের পৃথিবীর ভূমির ব্যাপ্তি হচ্ছে (২৪০০০)-চব্বিশ হাজার মাইল। আর ভূমি ঘণ্টায় (১০০০)-একহাজার মাইল গতিতে ঘূর্ণন করছে। এই কারণে ২৪ ঘণ্টায় আমাদের দিবা-রাত্রির চক্র পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
পৃথিবীর ভূমির ব্যাপ্তি (২৪০০০)-চব্বিশ হাজার মাইল। অন্যদিকে আরবী বংশজাত ঘোড়া একমাসে অতিক্রম করছে (৩৬০০০)-ছত্রিশ হাজার মাইল। এর অর্থ হচ্ছে ঐ ঘোড়া একমাসে দেড় পৃথিবী সমান সীমানা অতিক্রম করতে পারছে। একমাসে যখন দেড় পৃথিবী তবে এক বছরে ১৮ পৃথিবী (অতিক্রমের ক্ষমতা রাখে)।
একবছরে ১৮ পৃথিবীসম ভূমি অতিক্রম করলে ৭০ বছরে (১৮×৭০=১২৬০)-একহাজার দুশো ষাট পৃথিবীর পরিমাণ এরিয়া ঐ ঘোড়া অতিক্রম করবে।
মজার বিষয় হচ্ছে হারাম শরীফে একবার “সুবহানাল্লাহ” বললে শরীয়ত বলে একলক্ষ (সুবহানাল্লাহ’র) সাওয়াব পাওয়া যাবে।
এখন হিসাব দাঁড়াচ্ছে (১২৬০×১০০০০০=১২৬০০০০০০)-একশত ছাব্বিশ মিলিয়ন ভূমি! মাত্র একবার “সুবহানাল্লাহ” বলার দ্বারা আল্লাহ তায়ালা পরকালে এতো বৃহৎ জান্নাতে দান করবেন যে তা আয়তন বিবেচনায় (১২৬০০০০০০)-একশত ছাব্বিশ মিলিয়ন পৃথিবীর সমান!
চিন্তা করুন আমরা আমাদের কতো ক্ষতি করছি। নবী (আঃ) বলেন; মুসলমানদের যে ভূমি আখিরাতে পাওনা রয়েছে তা একেবারে বিরান ভূমি। তাঁর যতো ইবাদত হবে আল্লাহ তায়ালা সেই ভূমিকে ততো তৈরি করবেন ও সজ্জিত করবেন।
হাদীসের মধ্যে এসেছে; সোনা রোপার ইট দিয়ে, মিশকের সিমেন্ট দিয়ে বান্দার ঘর তৈরির সময় হঠাৎ ফিরিশতা কাজ বন্ধ করে দেন। অন্য ফিরিশতা জিজ্ঞেস করেন; আপনি কাজ কেন বন্ধ করেছেন? তিনি উত্তরে বলেন; বান্দা ইবাদত করা ছেড়ে দিয়েছে, এই কারণে আমাদের নির্মাণ সামগ্রীও শেষ হয়ে গেছে। ফলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। বান্দা যখন আবার ইবাদত শুরু করে তখন আবার ঘর নির্মাণ শুরু হয়।
*ইউটিউবে বয়ান শুনে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। ভিডিও লিংক >১ মে, ২০১৪ ফেসবুকে প্রকাশিত