ভূমিকা> অনেক জল্পনা কল্পনার পর দুপুরে জরুরী কাজে বিশ্বনাথের পথে রওয়ানা দিয়েছিলাম। উপশহর পৌঁছতেই জানতে পারলাম; বিশ্বনাথ না গেলেও চলবে। খুব ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু বুকাইর ভাই’র কথায় সিদ্ধান্ত নিলাম দরবস্ত ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সীরাত সম্মেলনে যাবো।
মাগরিবের পর দরবস্তের পথে যাত্রা করলাম এবং স্বল্প সময়ে পৌঁছেও গেলাম। এশার নামাজের পর হযরত হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ ঘণ্টাদেড়েক বয়ান করলেন। আলহামদুলিল্লাহ্ কারাগার, রিমান্ডের নির্যাতন শাইখের ভরাট কণ্ঠ, জোরালো যুক্তিপূর্ণ কথাবার্তা কেড়ে নিতে পারেনি। শাইখের বক্তব্য শুনে বেশ আনন্দ লাগছিলো। হেফাজতে ইসলামের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে চমৎকার কিছু কথা বললেন। বয়ান শেষে স্বল্প সময়ের ভেতরে সিলেটে চলে আসলাম।
>>>দরবস্ত ঈদগাহ ময়দানে থাকতেই খবর পেয়েছিলাম জামেয়া তওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা মাদরাসার সাবেক ছাত্র মাওলানা মামূনুর রাশীদ এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেছেন। মন খুব খারাপ হয়েছিলো। কিভাবে জানি বাবুনগরী (দা: বাঃ) কাছেও সংবাদটি পৌঁছে গিয়েছিলো। বয়ান পরবর্তী দোয়ায় তিনি মামুনুর রাশীদ ভাইয়ের জন্য দোয়া করেছেন।
মামূনুর রাশীদ ভাই “রাশীদ মামূন” নামে ফেসবুকে লিখতেন। আমার ব্লগে তিনি “হা-মীম রাশীদ মামূন” নামে লিখতেন। ব্লগে তাঁর সর্বশেষ পোস্টের শিরোনাম ছিলো “আলিম সমাজের বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহীদের পরিকল্পনাঃ”। তাঁর ব্যক্তিগত ব্লগে গেলেই তাঁর সম্পর্কে জানতে পারবেন>http://www.rashidmamun.blogspot.com/.
গাড়ীতে বসে আবু সাইদ উমর চাচাকে ফোন দিয়ে জানলাম, মামূনুর রাশিদের পাশাপাশি দাওরায়ে হাদিসের ছাত্র মুহাম্মদ শরীফ আহমদ একই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওসমানী হাসপাতালে আসার পর ইন্তেকাল করেছেন। আরেক ছাত্র ভাইয়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আল্লাহ’র বাণী “প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করানো হবে”। সুতরাং মৃত্যু অনিবার্য সত্য। ছাত্র থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করতে পারা এই দৃষ্টিকোণ থেকে সৌভাগ্যের বিষয় যে, আল্লাহ্র পথে একজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
মনে প্রচণ্ড কষ্ট অনুভব করছিলাম। বারবার মনে হচ্ছিলো, হায় আফসোস! মৃত্যুর মতো প্রকৃত সত্যকে ভুলে আছি। অথচ মৃত্যু কখন আমায় পাকড়াও করবে জানি না। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেককে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন। তাঁদের পরিবারকে ধৈর্য ধারণের তৌফিক দান করুন। ফেসবুকে প্রকাশিত