Masum Ahmad | মাসুম আহমদ
  • প্রচ্ছদ
  • সমসাময়িক
  • ধর্ম
  • রাজনীতি
  • সমাজ
  • প্রযুক্তি
  • রোজনামচা
  • মুসলিম বিশ্ব
  • ব্যক্তিত্ব
  • হ-য-র-ব-ল
  • মাতৃভূমি
Search
Home» ব্যক্তিত্ব » ফক্বীহুল মিল্লাত এর স্মরনে

ফক্বীহুল মিল্লাত এর স্মরনে

০
ফক্বীহুল মিল্লাত এর স্মরনে

mufti-abdur-rohman-rohফক্বীহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান রহ.। যার নামের শেষে এতোদিন লিখেছি “দা. বা. অথবা হাফিজাহুল্লাহ”। আজ প্রথমবার লিখলাম রহ.।

মুফতি সাহেব বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের একজন ছিলেন। উলামায়ে কেরামের সাথে সংশ্লিষ্ট অজস্র ঘটনা দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। আমার ক্ষুদ্র ধারণা থেকে বলছি, সবকিছু ছাপিয়ে অগণিত কওমী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে তিনি যে খিদমাত করেছেন, বর্তমান সময়ে তাঁর দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া কঠিন। বরং পক্ষপাতিত্বের চশমা খুলে দেখলে বলতে হবে, এমন উদাহরণ আমাদের আশেপাশে নেই।

মুফতি সাহেব রহ. সিলেটে বারংবার এসেছেন। আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম’র ৩০তম দস্তারবন্দী সম্মেলনে এসেছিলেন। আমাদের জামেয়াও আগমন করেছিলেন। মুগ্ধ নয়নে তাঁকে দেখেছি। তাঁর বয়ান শুনেছি।

আমার উস্তাদ মাওলানা আবুল খায়ের (দা. বা.) মুফতি সাহেবের প্রিয় ছাত্রদের একজন ছিলেন। উস্তাদের মুখে মুফতি সাহেব সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছি। মুফতি তাক্বী উসমানী (দা. বা.) -কে চিংড়ি খাওয়ানোর গল্প তো আমাদের জামাতের প্রায় সবাই জানে। তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ’র বাস্তব নমুনা ছিলেন তিনি।
আমার বড় ভাইয়ের মুখে শুনেছি ‘মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বসুন্ধরা’ –র সুবিশাল কুতুবখানার গল্প। যতো শুনেছি ততো মুগ্ধ হয়েছি।

মুতাওয়াসসিতাহ ২য় বর্ষে পড়ার সময় ইজতেমার সফরে ঢাকায় গিয়ে ‘মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বসুন্ধরা’ –য় গিয়েছিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, কোনো মাদরাসা এতো সুন্দর হতে পারে।

উত্তরবঙ্গের প্রায় সহস্রাধিক মাদরাসা শায়খ রহ. –এর অমর কীর্তি। বিশেষভাবে বগুড়ার জামিল মাদরাসার খ্যাতি তো দেশজুড়ে। দীর্ঘদিন ঐতিহ্যবাহী আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাছেমুল উলূম পটিয়া চট্রগ্রামে খিদমাত করেছেন। জামেয়াতুল আবরার, ঢাকা, শোলকবহর মাদরাসা, চট্টগ্রাম –সহ অজস্র মাদরাসা তাঁর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে।

দারুল উলূম দেওবন্দের সাথে মুফতি সাহেব রহ. –এর গভীর সম্পর্ক ছিলো। দারুল উলূম এবং জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তিনি অংশগ্রহণ করতেন। কখনো কখনো সভাপতি হিসেবেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। একইভাবে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের সাথেও সুসম্পর্ক ছিলো।

প্রতিবছর চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হতো। সায়্যিদ শাহ আব্দুল মজিদ নদীম নিয়মিত সেখানে আমন্ত্রিত হতেন। মুফতি তাক্বী উসমানী (দা. বা.) ও সায়্যিদ আরশাদ মাদানী (দা. বা.) –কেও দাওয়াত করতেন।

তিনি তানযীমুল মাদারিস আদ্বীনিয়্যা বাংলাদেশ (উত্তরবঙ্গ) -এর সভাপতি ছিলেন। সম্মিলিত কওমী মাদরাসা বোর্ডেরও চেয়ারম্যান ছিলেন।

ভালোমতো মনে আছে, আজ যারা হযরতের ইন্তেকালে কেঁদেকেটে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, কয়েকবছর পূর্বেও তাদের অনেকে তাঁর নিন্দা করতেন শুধু এই কারণে যে, তিনি তানযীমুল মাদারিস –এর সভাপতি ছিলেন। আমার এই আইডির ইনবক্স সাক্ষী, কিছু মানুষ শায়খ রহ. সম্পর্কে কি পরিমাণ বিদ্বেষ পোষণ করতেন তা কল্পনাও করতে পারবেন না। তুমুল ঝগড়া হতো। আর এই ঝগড়ার পিছনে একমাত্র কারণ ছিলো, তাঁকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু মাদরাসা বোর্ড সম্মিলিত হচ্ছিলো। আর কিছু মানুষের তা সহ্য হচ্ছিলো না।
আজ মনে হচ্ছে, যারা বিদ্বেষ পোষণ করতো, তারা মনের ভেতরে বিদ্বেষ রেখে শুধু কষ্টই করেছে। মুফতি সাহেব সম্মানের সাথেই এই জগতকে বিদায় জানিয়েছেন।

মুফতি সাহেব এই দুনিয়া ছেড়ে মাওলায়ে হাক্বীক্বির ডাকে সাড়া দিয়েছেন। দোয়া করি اللهم اغفرله و ارحمه و اجعل الجنة مثواه. ফেসবুকে প্রকাশিত