বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত বনাম বাংলাদেশের আসন্ন খেলাকে কেন্দ্র করে কিছু ভারতীয় একটি বিজ্ঞাপন বানিয়েছে। যার একটি অংশে দেখানো হয় একটি মানচিত্র, যাতে লেখা রয়েছে (1971, INDIA CREATED BANGLADESH) ইন্ডিয়া বাংলাদেশকে সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি হলেও দেশপ্রেমের মহান দায়িত্ব একটি গোষ্ঠী স্বেচ্ছায় নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। দেশপ্রেমের নতুন সংজ্ঞাও তারা নির্ধারণ করেছে। “আপনি ধর্মকে ভালোবাসেন”। আপনি দেশপ্রেমিক নন। “আপনি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের প্রতিবাদ করেন”। আপনি দেশপ্রেমিক নন। “আপনি ভারতের সমালোচনা করেন”। আপনি দেশপ্রেমিক নন।
দেশপ্রেমিক হওয়ার জন্য আপনাকে শাহবাগ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বলন করতে হবে। হোলি উৎসবে অংশ নিতে হবে। বাক স্বাধীনতার নামে ধর্ম বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করতে হবে। অন্যায়ভাবে তিস্তার পানি আটকে রাখলেও ভারতের সমালোচনা করা যাবে না। বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নিহত হলে পাল্টা জবাব দেয়া যাবে না।
‘কাজীর গরু কিতাবে আছে কিন্তু গোয়ালে যেমন নেই’ স্বাধীনতাও কি মুখে আছে বাস্তবে নেই। হয়তো নেই। নইলে স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন দাবী দেখে দেশপ্রেমের তথাকথিত ঠিকাদাররা অমন নীরব থাকে কিভাবে?
অদ্ভুত শুনালেও সত্য, কিছুদিন পূর্বে এক পাকিস্তানী ক্রিকেটারের ফেইক টুইটার আইডি থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু লেখা হয়েছিলো। সেইসময় একটি গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া এতো ভয়াবহ ছিলো যে, পারলে তখনি যুদ্ধ ঘোষণা করে ফেলে। পরবর্তীতে যখন প্রমাণ হলো সেই আইডিটি ভুয়া ছিলো, তখন সবাই নীরব।
কিন্তু ভারতীয় ভিডিও প্রচারের পর সেই একই গোষ্ঠীর কেউ কেউ ইশারা ইঙ্গিতে বলতে চাইছে, এসব ভিডিওকে পাত্তা দেয়ার কি দরকার। সব ভারতীয় তো আর এমন মনোভাব পোষণ করে না। কারো দাবী হচ্ছে, এসব ভিডিও-বার্তার জবাব আমরা মাঠে দেবো।
প্রশ্ন জাগে, যখন পাকিস্তানী ক্রিকেটারের ভুয়া টুইট সামনে আসলো, তখন কোথায় ছিলো এমন সহনশীলতা।
পাকিস্তান যেমন আমাদের শত্রু, ভারতও আমাদের শত্রু। একদল ১৯৭১ –এ অত্যাচার করেছে। আরেকদল বিগত ৩৩ বছর ধরে অত্যাচার করে যাচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানিদের বেলায় “আমরা খেলার সাথে ঠিকই রাজনীতি মেশাই” আর ভারতের প্রসঙ্গ আসলে বলি “আমরা খেলার সাথে রাজনীতি মেশাই না”।
এই দ্বৈতনীতি আমাদের পাচাটা জিহ্বার পরিচয় দেয়। পরিচয় দেয়, আমাদের মুখোশের আড়ালে থাকা প্রতারক চেহারার। উচ্চস্বরে জানান দেয়, দালাল কিন্তু দিনশেষে দালালই ……… ফেসবুকে প্রকাশিত