প্রযুক্তি অভিশাপ না আশীর্বাদ সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। আমাদের জীবনকে প্রযুক্তি অনেক সহজ করে দিয়েছে। কিন্তু সহজকে আমরা কতোটা সহজ রাখতে পারছি সেটি অনেক বড় প্রশ্ন।
প্রতিটি বস্তুর একটি গতিপথ আছে। আছে তার একটি অবস্থান। নির্দিষ্ট গতি আর যথাযথ অবস্থান হারিয়ে গেলে সেই বস্তু আর ভালো থাকে না। অতিরঞ্জিত কোনো কিছুই ভালো নয়। লেবু বেশী চিপলে তিতা হয়ে যায়। ভালো কিছুকে যখন ভালো ভেবে যার যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার শুরু হয়, তখন সেই ভালো আর ভালো থাকে না।
ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করেছে সন্দেহ নেই। কিন্তু কিছু সংখ্যক ব্যবহারকারীর কারণে সহজ জীবন অতিরিক্ত কঠিন হয়ে উঠছে।
ফেসবুকে যে কোনো কিছু লিখেই ট্যাগ করে দেয়া, অনুমতি ছাড়া গ্রুপে যুক্ত করা, হোয়াটস অ্যাপে গ্রুপ বানিয়ে তাতে যুক্ত করে হাবিজাবি ফটো, ভিডিও প্রেরণ করাটা নেশার মতো হয়ে গেছে। গতকালের কথাই বলি। অপরিচিত একজন আমাকে হোয়াটস অ্যাপের একটি গ্রুপে যুক্ত করলো। সাথে সাথে বেরিয়ে আসলাম। কয়েক মিনিটের মাঝে আবার যুক্ত করলো। আবার বেরিয়ে এসে ওই ব্যক্তিকে সোজা ব্লক লিস্টে পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু সবাইকে তো আর ব্লক করতে পারবো না। আর ব্লক করাটা কোনো সমাধানও নয়।
আমাদের বুঝতে হবে, কাউকে কোনো কিছু শেখানো মহৎ কাজ। কিন্তু যখন কেউ শিক্ষা গ্রহণে অনিচ্ছুক, তখন তাকে শেখানোর চেষ্টা করা অনৈতিক। আমার কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ, অন্যের কাছে তা গুরুত্বহীন হতে পারে। নিজের ভাবনা অন্যের উপর প্রয়োগ করাটা কেবল অসুন্দর নয়, অন্যায়ও।
প্রযুক্তিকে ভালোভাবে ব্যবহার করা দরকার। এখনো ফেসবুক আর টুইটারে আমাদের যাতায়াত সীমাবদ্ধ। কিন্তু উন্নত বিশ্বের অনেক মানুষই সময় নষ্ট হবে ভেবে এসব নেটওয়ার্ক এড়িয়ে চলে। ফেসবুকে হাই/হ্যালোর চাইতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। একটু মনোযোগী হলেই পথ খুঁজে পাবো। তখন অনলাইনে আমার সময়গুলো সত্যিই অপচয়ের খাতায় লিপিবদ্ধ হবে না। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের তৌফিক দান করুন। ফেসবুকে প্রকাশিত