চলতি সপ্তাহে নক্বশবন্দিয়া তরিকার বুজুর্গ মাওলানা জুলফিকার আহমদ নক্বশবন্দী দা: বাঃ –এর স্বহস্তে লিখিত সফরনামা “লাহোর সে তা-খাকে বুখারা ও সমরক্বন্দ” পড়ছি। কিছু গ্রন্থের পরিচয় ধারণ করার মতো শব্দ থাকে না কিংবা খুঁজে পাওয়া যায় না। আমি নিয়মিত বই পড়তে চেষ্টা করি। যেকোনো গ্রন্থ অধ্যয়ন কোনো না কোনোভাবে কাজে লাগে। কিন্তু মনের ভেতর খুব কম বই-ই প্রভাব ফেলে।
ভ্রমণকাহিনী হিসেবে লেখা হলেও “লাহোর সে তা-খাকে বুখারা ও সমরক্বন্দ” কেবল বিভিন্ন দৃশ্যের বর্ণনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং ভ্রমণ কাহিনীর আড়ালে গ্রন্থটি আল্লাহ তায়ালার অদৃশ্য সাহায্যের এক অনুপম বর্ণনায় পূর্ণ। কিছু অংশ পড়ার সময় হৃদয়ে অদ্ভুত এক অবস্থা তৈরি হয়। প্রশ্ন জাগে; সত্যিই কি এমন কিছু সম্ভব! যেহেতু লেখকের স্বহস্তে লিখিত, সেই হিসেবে অবিশ্বাসের কিছু নেই। বরং রিয়ার আশঙ্কায় অনেক কিছু হয়তো প্রকাশ করেননি, এমন ধারণা করা যেতে পারে।
১৯৯২ সালে জুলফিকার আহমদ নক্বশবন্দী হাফিজাহুল্লাহ কর্তৃক সম্পূর্ণ অজানা অচেনা রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্তদেশ যেমন ইমাম বুখারী, ইমাম তিরমিজী (রা:) –সহ লাখো উলামায়ে কেরামের জন্মভূমি মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র উজবেকিস্তান ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সফরকে ঘিরে রচিত গ্রন্থটি আমার ধারণা আরও অনেককে মুগ্ধ করবে। ২৯০ পৃষ্ঠায় রচিত গ্রন্থটির উল্লেখযোগ্য অংশ অনুবাদ করার ইচ্ছে বারবার জাগ্রত হচ্ছে। করবো কি করবো না ভাবছি। আপাতত যেহেতু মনের মধ্যে অনুবাদের ইচ্ছে জাগ্রত হয়েছে, সুতরাং কিছু অংশ অনুবাদ করে ফেলাই উত্তম।
তাসাওউফ সম্পর্কে যেহেতু আমাদের জানাশুনার খুব বেশি সুযোগ হয় না। আর গ্রন্থটিতে তাসাওউফ বিষয়ক অনেক আলোচনা আছে। সেই হিসেবে প্রথমে তাসাওউফ সম্পর্কে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা প্রয়োজন। আল্লাহ তায়ালা তৌফিক দিলে সময় সুযোগে অল্প অল্প অনুবাদ অনলাইনে প্রকাশ করবো।
=====================================================
ইমাম গাজ্জালি রাহ. বলেন : ”আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করে সর্ব প্রকার বাতিল ধ্যান ধারনা হতে মনকে মুক্ত করে নিষ্ঠার সাথে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেম অর্জন করাকে তাসাওউফ বলে।”
তাসাওউফের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে> ইসলাহে বাতেন, অর্থাৎ আভ্যন্তরীণ দোষসমূহ থেকে অন্তরকে পূত-পবিত্র করে সৎগুণাবলীর দ্বারা সজ্জিত করা
তাসাওউফের চারটি সিলসিলা অধিক প্রসিদ্ধ। যথা (১) ক্বাদেরিয়া- যা হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহ. –এর দিকে সম্বন্ধ করে বলা হয়। (২) চিশতিয়া- এটি হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতী রাহ. –এর সাথে সম্পৃক্ত। (৩) সোহরাওয়ারদিয়া- যা হযরত শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ারদী রাহ. –এর দিকে সম্বন্ধ করে বলা হয়। (৪) নক্বশবন্দিয়া- এটি হযরত বাহাউদ্দীন নক্বশবন্দী রাহ. –এর সাথে সম্পৃক্ত। (সূত্র : তাসাওউফ তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ)
> “লাহোর সে তা-খাকে বুখারা ও সমরক্বন্দ” ১ ফেসবুকে প্রকাশিত