উলামায়ে দেওবন্দ সম্পর্কে আল্লামা কাশ্মীরী (রহঃ) বলতেন; সাহাবায়ে কেরামের একটি দল যাচ্ছিলো। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের মধ্য থেকে কিছু আত্মাকে রেখে দিলেন। এই আত্মাগুলোই পরবর্তীতে উলামায়ে দেওবন্দের রূপে জন্ম নিয়েছে। যাতে করে শেষ যুগের মানুষেরা সাহাবায়ে কেরামের আদর্শকে স্বচক্ষে দেখতে পারে।
বাস্তবেই উলামায়ে কেরামের আদর্শকে দেখুন। তাঁদের খোঁদা ভীরুতা দেখুন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত উলামায়ে দেওবন্দ নবী (সা:) –এর আদর্শে সজ্জিত।
আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্বাচিত।
উলামায়ে দেওবন্দের দ্বীনী কর্মকাণ্ড কাকতালীয় কিছু নয়। ধারণা হয়, এসব কিছু আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্বাচিত। একটি বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক শতাব্দীর শেষে একজন মুজাদ্দিদ সৃষ্টি করেন। যিনি যাবতীয় শিরক, বিদআত, রুসুমাতকে বিলুপ্ত করেন এবং রাসূল (সা:) –এর সুন্নাতকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ১০০ বছরের ব্যাপারে হাদিসে বর্ণনা এসেছে।
উলামায়ে দেওবন্দের জীবনের প্রতি লক্ষ্য করলে অদ্ভুত কিছু তথ্য সামনে আসে। উদাহরণ স্বরূপ> শাহ আবদুল আযীয (রহঃ) –এর ইন্তেকাল হয়েছিলো ১২৩৯ হিজরিতে আর শায়খুল হিন্দ (রহঃ) –এর ইন্তেকাল হয়েছিলো ১৩৩৭ হিজরিতে। প্রায় ১০০ বছরের দূরত্ব। শাহ আবদুল আযীয (রহঃ) মুজাহিদ ছিলেন। শায়খুল হিন্দ (রহঃ) ও মুজাহিদ ছিলেন। শাহ আবদুল আযীয (রহঃ) ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন। শায়খুল হিন্দ (রহঃ) উক্ত ফতোয়ার উপর আমল করে দেখিয়েছিলেন। শাহ আবদুল আযীয (রহঃ) এর ইন্তেকালের প্রায় ১০০ বছর পর শায়খুল হিন্দের ইন্তেকাল হয়। ১০০ বছরের এই একটা কেবলমাত্র কাকতালীয় নয়। এটি স্রষ্টার নির্বাচন ধারণা হয়।
হযরত মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী (রহঃ) –এর ইন্তেকাল হয় ১৩২৬ হিজরিতে আর হযরত শাহ ইসমাইল শহীদ (রহঃ) –এর ইন্তেকাল হয় ১২৪৬ হিজরিতে। খলীল আহমদ সাহারানপুরী (রহঃ) শিরক ও বিদআতকে নির্মূল করেন। শাহ ইসমাইল শহীদ (রহঃ) “তাক্বভীয়াতুল ঈমান” লিখে বিদআতের জড় কর্তন করেন। দুজনের মৃত্যুর মাঝেও ১০০ বছরের দূরত্ব।
আল্লামা শামী (রহঃ) ১২৫২ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন আর আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহঃ) ১৩৫২ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। আল্লামা শামী (রহঃ) জ্ঞানের সাগর ছিলেন। আল্লামা কাশ্মীরী (রহঃ) ও জ্ঞানের সাগর ছিলেন।
এসব দেখে ভাবলে ধারণা হয়, উলামায়ে দেওবন্দ আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্বাচিত। এক বান্দা পৃথিবী থেকে বিদায় নিতেই অপরজনকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেন। যিনি পরবর্তী শতাব্দীতে মুজাদ্দিদের দায়িত্ব আদায় করেন।
*আকাবিরে দেওবন্দ> ৩) >>>পীর যুলফিকার আহমদ নকশবন্দী হাফিজাহুল্লাহ’র বয়ান হতে অনূদিত। ফেসবুকে প্রকাশিত