সায়্যিদ হুসাইন আহমদ (রহঃ) –এর অন্তরকে আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা:) –এর মুহাব্বাতে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। তাঁর জীবনীতে লেখা হয়েছে যে, জ্বিলহজ্জ মাস শুরু হতেই তিনি অস্থির হয়ে উঠতেন। মনে হতো, জ্বিলহজ্জের প্রথম দশকে তাঁর দেহ তো বাড়িতে; কিন্তু মন যেন আরবে অবস্থান করছে। সারাদিন ধ্যানমগ্ন থাকতেন। এমনকি রুটি খাওয়ার সময় কখনো কখনো বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলতেন “জানি না, প্রেমিকরা এখন কি করছে!” কেউ কা’বার চাদর ধরে দোয়া করছে, কেউবা মাক্বামে ইবরাহীমে সিজদা করছে> এই অবস্থাকে কল্পনা করেই তিনি বলতেন “মা’লূম নেহি উশশাক্ব কিয়া কার রাহে হোঙ্গে।”
খাবারের রুচি তখন যেন হারিয়ে যেতো। আকাশের পানে তাকিয়ে বলতেন; “মা’লূম নেহি উশশাক্ব কিয়া কার রাহে হোঙ্গে।” আল্লাহ তায়ালা তাঁর কথাকে এতো পছন্দ করেছেন যে, হারামাইন শরীফাইনের দরজা তাঁর জন্য উন্মুক্ত ছিলো। তিনি হিন্দুস্তানের সেই সৌভাগ্যবান আলেম, ১৮ বছর মসজিদে নববীতে হাদীস শিক্ষাদানের সৌভাগ্য যার হয়েছিলো। আল্লাহ কতো মহান! হাদীস পড়ানোর সময় সবুজ গম্বুজের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলতেন; (صلي الله عليه وسلم النبي هذا قال)
অকুতোভয় ছিলেন তিনি।
আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এতো সাহসী বানিয়েছিলেন যে, একবার ইংরেজরা তাঁকে করাচির আদালতে উপস্থিত করলো। তারা মাদানী (রহঃ) কে বললো; হুসাইন আহমদ! তুমি আমাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছে! এর পরিণাম কি তুমি জানো? তিনি বললেন; হ্যাঁ, আমি জানি। তারা বললো; কি জানো? তখন তিনি কাঁধের সাদা চাদর দেখালে ব্রিটিশরা বললো, এটি কী?
তিনি বললেন; এই আমার কাফন। যা আমি সবসময় কাঁধে নিয়ে চলাফেরা করি। ফতোয়া দেয়ার কারণে বেশি থেকে বেশি আমার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হবে। আমায় ফাঁসি দেয়া হবে। কিন্তু আমাকে কারো কাছে কাফনও চাইতে হবে না।
*আকাবিরে দেওবন্দ> ২) >>>পীর যুলফিকার আহমদ নকশবন্দী হাফিজাহুল্লাহ’র বয়ান হতে অনূদিত। ফেসবুকে প্রকাশিত