সাধারণ মানুষের কাছে তাহির উল কাদরী বিদেশি চক্রের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হয়, সেনাবাহিনীতে তার বেশ প্রভাব রয়েছে। এই ধারনার পিছনে বেশ শক্তিশালী প্রমাণাদিও আছে।
কয়েক বছর পূর্বে দেশ-বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর তাহির উল কাদরী কানাডায় চলে যান এবং একপর্যায়ে তিনি কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করেন। কয়েক বছর পূর্বে দেশে ফিরে এক বিশাল লংমার্চের নেতৃত্ব প্রদান করেন। অতঃপর দেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যা বাড়িয়ে আবার তিনি কানাডায় ওড়াল দেন।
সেনাবাহিনী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তাহির উল কাদরিকে বিভিন্নসময় ব্যবহার করে বলে গণমাধ্যমের ধারণা।
সাম্প্রতিক সময়ে নওয়াজ শরীফ সরকারের ভারতের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা, সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফের বিচার কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সেনাবাহিনী ক্ষুব্ধ ছিলো। যার প্রতিফলন হিসেবে তাহির উল কাদরী সরকার পতনের আন্দোলনে নামেন। শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা রক্ষা করতে নওয়াজ শরীফ সরকার সেনাবাহিনীর অনেকগুলো দাবী মেনে নেয়। সত্যিই বেশ অদ্ভুত এই রাজনীতি।
তাহির উল কাদরী আর ইমরান খান সরকার বিরোধী লংমার্চ শুরু করার পর আন্দোলন নস্যাৎ করতে নওয়াজ সরকার বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করেন। সেনাবাহিনী তখন সরকারকে সহযোগিতার বদলে কিছু দাবী পেশ করে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে; সেনা বিভাগ সংক্রান্ত বিষয়াদির যাবতীয় সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী গ্রহণ করবে। এমনকি সরকার সেনাবাহিনীকে কারো সাথে যুদ্ধের জন্য বাধ্য করতে পারবে না।
একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য দাবীগুলো মেনে নেয়া কঠিন হলেও নওয়াজ শরীফ ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখতে এসব দাবী মেনে নিয়েছেন। যার ফলে তাহির উল কাদরী ও ইমরান খানের চলমান আন্দোলন গতি হারিয়েছে। এসব বিষয়াদি সামনে রেখে বিশ্লেষকদের ধারণা, তাহির উল কাদরী সেনাবাহিনীর নির্দেশেই আন্দোলনে নেমেছেন।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক নীতি সুস্পষ্ট যে, তারা যতোটা নিজেদের দেশ রক্ষায় নিয়োজিত, তারচেয়ে বেশি তাদের বিদেশী পরিচালকদের মন যোগাতে ব্যস্ত। আফগান সীমান্তে সেনাবাহিনীর আচরণই তাদের পাশ্চাত্য প্রীতির প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। এটিও অস্বাভাবিক নয় যে, ইজিপ্টের মতো পাকিস্তানী সেনাবাহিনীও আমেরিকার অর্থের উপর নির্ভরশীল। ফলে হয়তো বৃহৎ কোনো পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক আন্দোলন। যাই হোক, তাহির উল কাদরী পাশ্চাত্যের চাকর হিসেবেই কাজ করছেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনে এটুকু সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ফেসবুকে প্রকাশিত