আমরা সবাই বিভিন্ন ঝগড়া বিতর্কের দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত। আসলে দেখা নয়, আমরা বিতর্ক করতে অভ্যস্ত। যখন তখন যেকোনো বিষয়ে বিতর্ক অধিকাংশ সময় আমাদের কাছে স্রেফ বিনোদন বৈ কিছু নয়।
ঝগড়া বিবাদের সময় আমরা নিজেদের রেসলিং রিং –এর মধ্যে অনুভব করি আর প্রতিপক্ষকে যেকোনো ভাবে হারানোর চেষ্টায় থাকি। এই অবস্থায় আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলতে প্রভাবিত করে এবং শেষ পর্যন্ত এই লড়াই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে শত্রুতায় পৌঁছিয়ে সমাপ্ত হয়।
কিন্তু যদি আমরা বিতর্কের মঞ্চে মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি তবে ভিন্ন দৃশ্যের অবতারণাও সম্ভব। যেমন যার সাথে বিতর্ক করছি তাকে “অবশ্যই আপনি ভুল বলছেন” বলার পরিবর্তে যদি বলি “হতে পারে আপনি সঠিক বলছেন” তবে আমার এই কথার আরেকটি আবশ্যক অর্থ হচ্ছে “হতে পারে আমি ভুল”।
নম্রতার সাথে এই বক্তব্য উপস্থাপন করলে প্রতিপক্ষ অবশ্যই নম্র আচরণ দেখাতে বাধ্য। আর এই বক্তব্যের দ্বারা আমি প্রতিপক্ষের নিরঙ্কুশ সত্যতাও মেনে নিচ্ছি না। কারণ “হতে পারে আপনি সত্য” এর বিপরীতে “হতে পারে আপনি মিথ্যা” ও রয়েছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, বিতর্কের মাধ্যমে সত্য গ্রহণ কিংবা পথ পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত খুব একটা নেই। বরং নম্র ও নিঃস্বার্থ আচরণই মানুষের মানসিকতাকে পরিবর্তন করে। তাই অনর্থক বিতর্কের মঞ্চে “হতে পারে আপনি সঠিক বলছেন” জাতীয় বাক্য এতো শক্তিশালী হয়ে উঠে যে, দীর্ঘদিনের জন্য প্রতিপক্ষের মনে আপনার প্রতি মমতা আর মান্যতার জন্ম দেয়। তাই আসুন, আমাদের নিত্য ব্যবহৃত আলাপচারিতায় আমরা যোগ করি নতুন বাক্য “হতে পারে আপনি সঠিক বলছেন”।
*ভিনদেশী ভাষায় লিখিত একটি দীর্ঘ আলোচনার সারসংক্ষেপ। ফেসবুকে প্রকাশিত